মো. এমদাদুল হক (পাবনা): পেঁপে বাদশা দেশের কৃষির এক মডেল। তাঁর মতো কিছু মানুষ সৃষ্টি করতে পারলেই দেশের উন্নয়ন করা সহজ হবে। তার খামার এখন বাণিজ্যিক কৃষি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। গৌরবজনক শিল্পের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। সঠিক পদ্ধতিতে যত্নের সাথে প্রযুক্তির মাধ্যমে বাদশার মতো করে কৃষি খামার করে নিজ তথা দেশকে কৃষিতে এগিয়ে নিতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম গত ১৭ আগস্ট পাবনায় এক সফরে এসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চাষী ঈশ্বরদী উপজেলার আলহাজ্ব শাহজাহান আলী পেঁপে বাদশার মা-মনি কৃষি খামার পরিদর্শন করার সময় এসব কথা বলেন। কঠোর পরিশ্রম আর সাধনার বিনিময়ে পেঁপে বাদশা সৃষ্টি করেছেন এই কৃষি খামার। তার সফলতায় কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে ঈশ্বরদীর সলিমপুর গ্রামে। কৃষির এই অসাধারণ সফলতায় জাতীয়ভাবে তিনি সনাক্ত হয়েছেন বাদশা হতে পেঁপে বাদশায়।
পেঁপে বাদশা তিনবার জাতীয় পুরস্কার সহ কৃষিতে অনেক বার বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। চেষ্টা, সাধনা, অধ্যাবসায় কৃষিতে সফল এক ব্যক্তি বাদশা। তার সুপরিকল্পিত যত্নের সাথে গড়ে তোলা মা-মনি কৃষি খামারে আছে ড্রাগন ফলের বাগান, পেয়ারা বাগান, শরিফা বাগান, লিচুর বাগান, আম বাগান, পেঁপে বাগান, কদবেল বাগান ও বেল বাগান, জামরুল বাগান, কূল বাগান, ভিয়েতনামী খাটো জাতের নারিকেলের বাগান, জাম্বুরাসহ অন্যান্য জাতের ফলগাছ ঘুরে ঘুরে দেখেন মহাপরিচালক। প্রত্যেকটা বাগান দেখেন আর বিস্ময় প্রকাশ করেন।
এছাড়াও বাগানে আছে নানারকম সবজি । যেমন, লেটুশ পাতা, রেড ক্যাবেজ, চাইনিজ ক্যাবেজ, চাইনিজ ওল। বাগানের রোগ বালাই, পোকা-মাকড় দমন, সার প্রয়োগ, পানি সেচ সহ পরিচর্যার জন্য বাগানে প্রতিদিন ১৫-২০ জন শ্রমিক কাজ করে। যারা বাগান করতে আগ্রহী তাদেরকে বাগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ, কলাকৌশলসহ যাবতীয় পরিকল্পনা দিয়ে সহায়তা করেন পেঁপে বাদশা। এছাড়া তিনি সুলভ মূল্যে চারা সরবরাহ করে থাকেন যাতে তারা আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারে।
পরে তিনি ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নে অবস্থিত আমিরুল ইসলামের বৃহৎ প্রাণিসম্পদ খামার পরিদর্শন করেন। সর্বশেষ বরইচারা ব্লক, সলিমপুর ইউনিয়নের বরইচারা ঈদগাহপাড়া মহিলা সিআইজি (ফসল) সমবায় সমিতি লি. এর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। উক্ত সিআইজি দলটি এনএটিপি-২ প্রকল্পের দল। সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক রেজিস্টার্টকৃত সিআইজি দল।
পরিশেষে জাতীয় পদকসহ অন্যান্য পদকপ্রাপ্ত শাজাহান আলী বাদশার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আরশেদ আলী, অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. এস. এম, হাসানুজ্জামান, পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আজাহার আলী, পাবনা টেবুনিয়া হটিকালচাররের উপপরিচালক কৃষিবিদ কে. জে. এম আব্দুল আওয়াল, ঈশ্বরদী উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল লতিফ, পাবনা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ. এ মাসুম বিল্লাহ এবং কৃষি সম্প্রসারণ ঈশ্বরদী উপজেলার কৃষি সম্প্রসাণ অফিসার কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম।