ঢাকা সংবাদদাতা: আগস্ট হচ্ছে বাংলার আকাশ বাতাস নিস্বর্গ প্রকৃতির অশ্রুসিক্ত হওয়ার মাস। বঙ্গবন্ধুর উন্নত চিন্তা দেশের জন্য নির্দেশনা হয়ে থাকবে সারাটি জীবন। তিনি পঁচাত্তরে বড় স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাত দিয়েছিলেন। যাকে বলা হয় বঙ্গবন্ধুর ২য় বিপ্লব। যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কৃষি ব্যবস্থার সংস্কার। ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে উপস্থিত ছাত্র/ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বইয়ের সঙ্গে সঙ্গে একটু প্রাকটিক্যাল কাজও করতে হবে। কৃষি বিপ্লবের জন্য প্যান্ট-শার্ট-কোট খুলে মাঠে নামতে হবে। তা না হলে হবে না। ইকোনমি গণমুখি করতে না পারলে, যদি গ্রামের দিকে না যাওয়া যায়, কৃষিতে বিপ্লব আসবে হবে না। সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক আলাপ আলোচনা হচ্ছে। এর ফলে নানা অজানা তথ্য বের হয়ে আসছে।
মঙ্গলবার (২০আগস্ট) কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটরিয়ামে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন।
কুষিমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তিলে তিলে ধ্বংস করা, স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশ পরিচালনা করবে। ২০০১-২০০৬ সালে আত্মস্বীকৃত খুনিদের সম্মানিত করা হয়েছে, তাদের মন্ত্রী করা হয়েছে। দেশ বিরোধী মানবতাবিরোধী জামাতকে তারা পুণর্বাসন করে দেশে এনে গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, পল্টনের এক সভায় তারেক জিয়া বলেছিলেন ছাত্রদল ও ছাত্র শিবির এক মায়ের দুই সন্তান। এই যদি হয় তাদের চরিত্র তাহলে বিএনপি ও জামাতকে কিভাবে আলাদা করা যাবে। এর অর্থ যারা পাকিস্তানের পক্ষে ছিল তারা দেশকে পিছিয়ে নিতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড দেশ বিরোধীদের পুর্নবাসন করা এবং বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানের আদলে পরিচালনার পেছনে নেতৃত্ব দিয়েছিল জিয়া। বিএনপি-জামাত তারা জয় বাংলা বলে না, তারা বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে না। একাত্তরে পরাজিত হয়েছে,এখনও তারা নানা চক্রান্ত করছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এদের কঠোর ভাবে মোকাবেলা করবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সেখানেও বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পচাত্তরের নির্মম হত্যাকান্ডের পরে ক্রমান্বয়ে ইতিহাস বিকৃতির করার যে প্রবণতা ছিল তা খুবই দু:খজনক। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে দেশ পরিচালনা করছেন জাতির পিতার কন্যা বিশ্ব মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার দরুন এদেশের জনগণ তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় বসিয়েছেন দেশকে এগিয়ে নিতে। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন আমার গ্রাম আমার শহর, শহরের সকল সুযোগ সুবিধা গ্রামে নিয়ে যেতে।
আমাদের মূল দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করা। সকলের দায়িত্ব হবে কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ ও যান্ত্রিকীকরণ করা। কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ করা গেলে আমার গ্রাম, আমার শহর বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যাবে। কৃষির আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকীকরণ করা সরকারের চ্যালেঞ্জ। যান্ত্রিকীকরণ আংশিক করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য সর্বাত্মক ভাবে কাজ করতে হবে যাতে রপ্তানি বাড়ানো যায়। শোক দিবসের আলোচনা তখনই সফল হবে যখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসারে তার দেখানো পথে আমরা চলবো।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মীর নুরুল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মো. আরিফুর রহমান অপু,অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এম.পি. কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস প্রফেসর ড. সাত্তার মন্ডল।