বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মত। বেকারত্ব ও দারিদ্রতা দূরীকরণে বাংলাদেশের পোল্ট্রি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়ে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসে অনুষ্ঠিত পাম নেদারল্যান্ডস সিনিয়র এক্সপার্ট এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘পোল্ট্রি খামার ব্যবস্থাপনা ও জীবনিরাপত্তা’ শীর্ষক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রথম পর্বের সমাপনী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় একথা বলেন ডাচ রাষ্ট্রদূত।
হ্যারি ভারওয়ে বলেন, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশের পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা করছে নেদারল্যান্ডস সরকার।
উভয় দেশের মাঝে বাণিজ্যিক সম্পর্কের অধিকতর উন্নয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশী পণ্যের ব্রান্ডিং -এর দিকে এখন নজর দেয়া দরকার। তিনি বলেন, নারীরা এখনও বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর ভাষায় Women should have digital access . তবে করেন মি. ভারওয়ে।
বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদনের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে। নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদন করতে হলে সবার আগে খামারিদের সচেতনতা বাড়াতে হবে; কিভাবে স্বল্প খরচে নিরাপদ খামার গড়া যায় সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। খামার ব্যবস্থাপনা, জীবনিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি এ লক্ষ্য অর্জনের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে গত ২৫ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম, সাভার, গাজীপুর ও রংপুরে চারটি প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন পোল্ট্রি কোম্পানীতে কর্মরত ভেটেরিনারি ডাক্তার ও টেকনিক্যাল ট্রেইনারগণ অংশগ্রহণ করেছেন। এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনে সহযোগিতা করার জন্য পাম নেদারল্যান্ড সিনিয়র এক্সপার্ট এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং সেই সাথে এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদনে খামারিদের অনুপ্রাণিত করতে সারাদেশে কিছু মডেল খামার এবং ভোক্তার স্বার্থে কিছু মডেল লাইভবার্ড মার্কেট স্থাপনের প্রস্তাব দেন বিপিআইসিসি’র সহ-সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ অঞ্জন।
বিপিআইসিসি’র সদস্য আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার বলেন, আমাদের এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। কিছু পাইলট প্রকল্প হাতে নিতে হবে। এ প্রকল্পের সফলতাই সাধারণ খামারিদের অনুপ্রাণিত করবে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা এবং বাংলাদেশের খামার ব্যবস্থাপনা ও জীবনিরাপত্তা বিষয়ে নিজস্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন পাম নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রি এক্সপার্ট মি. লিও ভ্যান দে ভেলদে। বিদ্যমান অবস্থার উন্নয়নে কিছু পরামর্শও দেন তিনি।
পাম নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিকস এন্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের প্রধান, প্রফেসর ড. আব্দুল গাফ্ফার মিয়া উক্ত সভায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অন্যান্যের মাঝে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ইকোনোমিক এন্ড কমার্শিয়াল এফেয়ার্স এবং প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সিনিয়র এডভাইজর মুন্নুজান খানম, ফুড এন্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি বিষয়ক সিনিয়র পলিসি এডভাইজর এ.কে. ওসমান হারুনী, বিপিআইসিসি’র সদস্য মো. আহসানুজ্জামান, উপদেষ্টা শ্যামর কান্তি ঘোষ এবং মো. সাজ্জাদ হোসেন।
পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, পাম নেদারল্যান্ডস সিনিয়র এক্সপার্ট এবং বিপিআইসিসি আগামীতেও একযোগে কাজ করবে বলে জানানো হয়।