মো. আরিফুল ইসলাম (বাকৃবি) : কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শিশ্চিতকরণের মাধ্যমে কৃষি নির্ভর অনেক দেশ অর্থনীতিতে এগিয়ে গেছে। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে অল্প জমিতে অধিক উৎপাদন যেমন সম্ভব হচ্ছে তেমনি কমবে উৎপাদন খরচ। বাংলাদেশে কৃষি কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার আশানুরুপ না হওয়ার ফলে কৃষকরা লাভবান হতে পারছে না। প্রতি বছরই লোকসানে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। ফলে দরিদ্র কৃষকরা আরও দরিদ্র হচ্ছে। তারা ফসল উৎপাদনেও আগ্রহ হারাচ্ছে। সরকার ভুর্তকি দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার দৃশ্য এবছর দেশবাসী দেখেছেন। ফলে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি উপজেলায় টেকনিক্যাল ক্যাডার সার্ভিসের মাধ্যমে কৃষি প্রকৌশলী নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) টেকনিক্যাল ক্যাডার চালুর দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। গত দিনের মত বৃহস্পতিবারও ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে তারা এ কর্মসূচী পালন করেন। দাবি না মানা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেন তারা।
জানা গেছে, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের জন্য বিসিএস এ টেকনিক্যাল ক্যাডার এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কৃষি প্রকৌশলীদের জন্য আলাদা উয়ং চালুর দাবিতে গত সোমবার বিকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা। চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। এটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এক পর্যায়ে ভিসির বাসভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে তারা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলানায়তনের সামনে একটি মানববন্ধনেরও আয়োজন করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, বিসিএসে কৃষি প্রকৌশলীদের জন্য টেকনিক্যাল ক্যাডার না থাকায় প্রকৌশলীরা কৃষকের দোঁড়গোড়ায় গিয়ে সেবা দিতে পারছেন না। যান্ত্রিকীরণের যুগে বিপুল জনসংখ্যার বিপরীতে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম। অল্প জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের অবশ্যই প্রযুক্তি নির্ভর হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু কৃষিতে প্রযুক্তির ছোঁয়া না লাগায় কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ অনেক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। বক্তরা উল্লেখ করেন, প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়ার ফলে, কর্তন মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের জন্য হাহাকার লেগে যায়। এক দিনে কর্তন শ্রমিকের মজুরি দাঁড়ায় ৫০০-৮০০ টাকায়। এ থেকে উত্তোরণের জন্য বিসিএসে টেকনিক্যাল ক্যাডার চালুর মাধ্যমে প্রত্যেক উপজেলায় কৃষি প্রকৌশলীদের জন্য নিয়োগের ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি বলে জানান তারা।