ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া ১৪ জন জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করেছেন বনদস্যু আমিনুর বাহিনীর সদস্যরা। গত তিন দিনে পশ্চিম সুন্দরবনের কলাগাছি, দোবেকী এবং কোবাদক এলাকা থেকে এসব জেলেকে অপহরণ করা হয়। অপহৃত জেলেদের মধ্যে রাজ্জাক ওরফে রাজু, এমপি সজল, আবু নাসির, আনারুল, হেলালুজ্জামান ও শাহা আলমের নাম জানা গেছে। বাকিদের পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা না গেলেও ফিরে আসা জেলেদের দাবি, আরও অন্তত আটজন জেলেকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে গেছে বনদস্যুরা।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জেলেসহ জিম্মি জেলেদের স্বজনরা নাম প্রকাশ করার শর্তে জানান, বনদস্যু আমিনুর বাহিনীর পরিচয়ে সাত সদস্যের দলটি ৮ সেপ্টেম্বর দোবেকী এলাকা থেকে শাহআলম ও তার ভাইসহ তিনজনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। পরে ৯ সেপ্টেম্বর কোবাদক এলাকা থেকে পাঁচ জেলেকে জিম্মি করে তারা। এসময় জিম্মি জেলেদের দুই সহযোগীকে বনদস্যুরা মারপিট করে বাড়িতে ফেরার সুযোগ দেয় দ্রুততম সময়ের মধ্যে জিম্মি জেলেদের জন্য দাবিকৃত টাকা পরিশোধের জন্য। এ সময় বনদস্যু দলটি ০১৯৫৩৭২৫৬৫০ নম্বরে যোগাযোগের পরার্মশ দিয়ে ওই দুই জেলেকে ছেড়ে দেয় বলেও ফিরে আসা জেলেরা জানান।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন থেকে পাস নিয়ে বনে প্রবেশের পরপরই একই বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সজলসহ ছয় জেলেকে অপহরণ করা হয়। নির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে ফোন করে পরবর্তীতে মুক্তিপণের টাকা কোথায় কখন কীভাবে পৌঁছাতে হবে তাও জানিয়ে দেয় তারা। ফিরে আসা এসব জেলেদের অভিযোগ আগের বহরে বনদস্যু আমিনুর বাহিনীর প্রধান আমিনুরের ভায়রা ও তার ভাইয়েরা ছিল।জেলেদের দাবি আমিনুরের ওই ভায়রা ইতোপূর্বে তার পক্ষে মুক্তিপণের টাকা গ্রহণ করে এবং বিষয়টি পুলিশের নজরদারিতে ছিল। কিন্ত পুলিশ রহস্যজনক ভাবে মুক্তিপন আদায়কারী আমিনুরের ওই ভায়রাকে কিছুই বলেনি।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা জানান, জেলে অপহরণের বিষয়ে কেহ থানায় লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।