চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য সরকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ নামে একটি যুগান্তকারী আইন প্রণয়ন করেছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ জনভোগান্তি নিরসনে অনেকগুলি উদ্ভাবনী উদ্যোগ এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতো কাঠামো প্রতিষ্ঠা হলেও অধিকাংশ ভোক্তারা অসংগঠিত, ঘুমন্ত ও নিস্ক্রিয় থাকায় এ সমস্ত সরকারী উদ্যোগগুলির সুফল সাধরণ জনগন পাচ্ছে না। দেশে কাঁচা মাছ, মাংশ থেকে শুরু করে সকল ব্যবসায়ীরা সুসংগঠিত আর ভোক্তা হিসাবে সাধারণ জনগণ সংগঠিত ও শক্তিশালী নয়, বিধায় ব্যবসায়ীরা বারবার বিভিন্ন অযুহাতে জনগনকে জিম্মি করে জনগনের পকেট কাটছে। আর ব্যবসায়ী সংগঠনের চাপে প্রশাসন সেখানে নিরব দর্শক হয়ে থাকছেন। তৃণমূলে সত্যিকারের সুশাসন ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধিকার ভোগ করার পাশাপাশি নাগরিকদেরকে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে। আর এ কাজে দল-মত, জাতি ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতে করণীয় নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) হাটহাজারী উপজেলা উক্ত সভার আয়োজন করে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জমান। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, অনেকের ধারনা প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্থ হলে অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়া যাবে না। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর আওতায় একজন ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থ ও প্রতারিত হলে সরাসরি অতি সহজে বিনা কোর্ট ফিঃ ও অ্যাডভোকেট নিযুক্ত ছাড়াই মোবাইল, ফেসবুক, ইন্টারনেট, চিঠির মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। অভিযোগ প্রমানিত হলে জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী পাবেন।
এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রিয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে গণশুণাণী ও মাঠ পর্যায়ে বাজার তদারকির মাধ্যমে অভিযোগগুলি দ্রুত নিস্পত্তি করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ জনগণের মাঝে এ বিষয়ে পরিস্কার তথ্য না থাকায় জনগণ ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় সরকারের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ থেকে তেমন সুফল পাচ্ছে না। অভিযোগ স্থানীয় ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে, সরকারী সেবা ৩৩৩ অথবা ক্যাবের স্থানীয় শাখার মাধ্যমেও অভিযোগ দাখিল করা যাবে। তাই সাধারণ জনগণ ও ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে এই যুগান্তকারী আইন ও সুযোগ সম্পর্কে সর্ব সাধারণকে জানানোর জন্য ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্ঠির উদ্যোগ নেবার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
ক্যাব হাটহাজারী উপজেলা শাখার সভাপতি ন ম জিয়াাউল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম। মুখ্য আলোচক ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারারম্যান শামীমা আফরিন মুক্তা, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত।
ক্যাব হাটহাজারীর সহ সভাপতি আহসান আরিফ চৌধুরী জুয়েলে ও যুগ্ন-সম্পাদক নুরুল ইসলাম নোবেল এর যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনায় আরো অংশনেন করেন ক্যাব ইয়ুথ গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এন এম রিয়াদ, সামাজিক সংগঠন জাগৃতির সভাপতি এডভোকেট মোঃ জামাল উদ্দিন, সামাজিক সংগঠন জাগরনের সভাপতি মো. খায়“ন্নবী, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সেলিম সাজ্জাদ, হাটহাজারী পৌরসভা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম, মীরের হাট বাজার সমিতির সভাপতি মাওলানা মীর ইদ্রিস, এনায়েতপুর বাজার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ এনাম, গাউসিয়া কমিটি পৌর বাজার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম, এন জহুর মার্কেটের সভাপতি মো. বোরহানউদ্দিন, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ জাহেদ, ক্যাব হাটহাজারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এম এন এ রুবেল প্রমুখ।