নিজস্ব প্রতিবেদক: আমাদের কৃষি খাতে যথেষ্ট পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন করছে; কিন্তু মানুষের যে আয় তা দিয়ে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। আয় বৃদ্ধি করতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে, যেহেতু কৃষিতে কর্মসংস্থান কমে যাচ্ছে কৃষি যান্ত্রিকরণের ফলে। এখন কৃষি প্রক্রিয়াজাত ও শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির করে মানুষের আয়বৃদ্ধি করতে হবে। আয় বৃদ্ধি পেলে তখন সে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করবে। বাংলাদেশ সরকার দেশ থেকে সম্পুর্ণরুপে অপুষ্টি রোধে অঙ্গিকারাবদ্ধ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এম.পি রাজধানীর একটি হোটেলে দুই দিন ব্যাপী Feed The Future Innovation Lab for Nutrition’ Scientific Symposium and Technology Exhibition. Agriculture to Nutrition Pathways শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। সরকার সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করছে। নিবার্চনী ইশতেহারে অঙ্গিকার রয়েছে । নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে এসডিজিতে যে অভিষ্ট লক্ষ্য দেয়া আছে তা অবশ্যই বাস্তবায়ন করবে সরকার। যেহেতু ইতপূর্বে এমডিজি’র প্রায় সবগুলো গোল অর্জণ করেছে বাংলাদেশ,এখন এসডিজিও এর অভিষ্ট অর্জনে কাজ করছে সরকার। উন্নত বাংলাদেশের যোগ্য নাগরীক গড়তে নিরাপদ খাদ্যের কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবনযাপনে ‘পুষ্টি’ হল কেন্দ্রবিন্দু। পুষ্টি হল শরীরে খাদ্যের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ। বর্তমান ও আগামী সফল প্রজন্মের জন্য এটি অস্তিত্বের দিশা। প্রতিদিনের শারীরিক ক্রিয়াকর্ম ও পুষ্টিকর খাদ্যের মেলবন্ধন সুস্বাস্থ্যের ভিত্তি গড়ে তোলে। একটি সুস্থ শিশু তুলনামূলকভাবে বেশী ভালো শিখতে পারে। পর্যাপ্ত পুষ্টি-সম্পন্ন মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশি সৃজনশীল। স্বল্প পুষ্টির কারণে শরীরের অনাক্রম্যতা কমে যেতে পারে, দুর্বলতা বাড়তে পারে, শারীরিক ও মানসিক বিকলঙ্গতা বাড়তে পারে এবং যেকোন ধরণের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
আমাদের কৃষি খাতে যথেষ্ট পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন করছে; কিন্তু মানুষের যে আয় তা দিয়ে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। আয় বৃদ্ধি করতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে,যেহেতু কৃষিতে কর্মসংস্থান কমে যাচ্ছে কৃষি যান্ত্রিকরণের ফলে। এখন কৃষি প্রক্রিয়াজাত ও শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির করে মানুষের আয়বৃদ্ধি করতে হবে। আয় বৃদ্ধি পেলে তখন সে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করবে। বাংলাদেশ সরকার দেশ থেকে সম্পুর্ণরুপে অপুষ্টি রোধে অঙ্গিকারাবদ্ধ।
অপুষ্টি রোধে রাজনৈতিক অঙ্গিকার সবচেয়ে বেশী কার্যকরী বল্লেন আলোচকবৃন্দ । তারা আরও বলেন,বর্তমান সরকার অপুষ্টি রোধে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে,যেমন ২০০৭ সালে খর্বাকার (পাঁচ বছরের নিচে) শিশু ছিল ৪৩ শতাংশ,২০১৭-১৮ সালে তা কমে হলো ৩১ শতাংশ। স্বল্প ওজনের শিশু ৪১শতাংশ থেকে কমে ২২শতাংশ হলো এবং ক্ষিন স্বাস্থ্য ১৭ শতাংশ থেকে কমে ৮ শতাংশ হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিবি) ড. মো. রুহুল আমিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ, জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিলের মহাপরিচালক ডা. মো. শাহ নেওয়াজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড.প্যাট্রিক ওয়েব পরিচালক ফিড দা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর নিউট্রেশন। কি নোট উপস্থাপন করেন আসিডিডিআর’বি এর সিনিয়র পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ।