নিজস্ব প্রতিবেদক: মাটির ক্ষয় টেকসই কৃষি উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে মাটি ক্ষয়ের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সেখানে ক্ষয়ের মাত্রা প্রায় ১২ শতাংশ। আমরা মাটিকে যথাযথ ব্যবহার না করে তার উর্বরতা শক্তি নষ্ট করে ফেলছি।
বৃহস্পতিবার (৫ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এম.পি, ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০১৯’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলে। এবারে দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের ভবিষৎ’ ‘মৃত্তিকার ক্ষয়রোধ’। রাজধানীর খামারবাড়ির আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়ামে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট দিবসটির আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনষ্টিটিউটের প্রকাশিত sovuenir এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, ক্রমবর্ধমান নগরায়ন, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস এবং অপরিকল্পিত চাষাবাদের ফলেও অনেক অঞ্চলের মাটি নষ্ট হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাটির পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির ফলে মৃত্তিকা এখন হুমকির মুখে রয়েছে। এর কারনে বছরে০.৪ শতাংশ ফসল উৎপাদন হ্রাস পায়। আরো একটি সমস্যা হচ্ছে ইট ভাটা, এটি বেড়েই চলছে।
তিনি বলেন, কৃষক ধানের মূল্য পাচ্ছে না। সে কীভাবে তার পরিবার নিয়ে চলবে, কিভাবে তার সন্তানদের শিক্ষা দিবে? কিথাবে সে পুষ্টিকর নিরাপদ খাবার তুলে দিবে সন্তানদের মুখে। কৃষকদের লাভবান করতে হলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করতেই হবে। সরকার এক্ষত্রে প্রণোদনার দিচ্ছে। এ তিনি সময় বিভিন্ন সারের মুল্য কমানোর কথা উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষি শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা দিতে হবে। মাটির ক্ষয়রোধের প্রযুক্তি নিয়ে আসতে হবে, টপ সয়েল ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। বর্তমানে মানব সৃষ্ট ও প্রাকৃতিক কারণে মাটি ধ্বংসের অন্যতম কারণ। যার কারণে উপরের মাটি নষ্ট হচ্ছে। যদি আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য বাসযোগ্য মাটি রেখে না যাই, তাহলে নগদ অর্থ ও ধনসম্পদ কোনো কাজে আসবেনা।
তিনি আরো বলেন, ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। ফসলের উৎপাদন কমে যাবে যার বিরুপ প্রভাব সারাবিশ্ব ব্যপী পরবে। আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর পরিবেশে তৈরি করতে আমাদের সকলকে মাটি রক্ষায় সচেতন হতে হবে। মাটির গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝাতে হবে এবং মৃত্তিকা সম্পদ সংরক্ষণে জনগণকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক বিধান কুমার ভান্ডার -এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মো. নাসিররজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হক ও FAO এর বাংলাদেশে প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এস.এম ইমামুল হক । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট -এর প্রকল্প পরিচালক ড. মো.আব্দু বারী।
দিবসটি উপলক্ষে ৩ ক্যাটাগরীতে ৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সয়েল কেয়ার এ্যাওয়ার্ড ২০১৯ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা পেয়েছেন, বরিশালের মোঃ সুলতান হোসেন, নরসিংদির ড.মোঃ নুরুল ইসলাম ভূইয়া এবং সিলেটের মো. আব্দুল আহাদ শাহীন। সম্মাননা হিসেবে ছিলো একটি ক্রেস্ট ও নগদ ১৫ হাজার টাকা।