নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ও রাশিয়ার ৪৮ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় থেকে রাশিয়া এ দেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা বাংলাদেশের জনগণ চিরদিন মনে রাখবে। বাংলাদেশের আমদানিকৃত সারের সিংহভাগ আসে রাশিয়া থেকে।
আজ কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এর সাথে মন্ত্রণালয় তার অফিসকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত Alexander I.Ignatov (আলেকজেন্ডার আই ইগন্যাটোভ) এর নের্তৃত্বে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
দুই দেশের মধ্যে এমওপি সার আমদানি নিয়ে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান মো. সাইদুল ইসলাম এবং রাশিয়ার পক্ষে jsc Foreign Economic Association ‘Prodintorg’ এর General Director পোটাপোভ মিখাইল পেটরোভিস Potapov Mikhali Petrovich) । চুক্তিতে ১ লাখ ৫০ হাজার মে.টন এমওপি সার আমদানি করা হবে রাশিয়া হতে এবং এর সাথে আরো ৩০ হাজার মে.টন অতিরিক্ত ধরা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান ও অতিরিক্ত সচিববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশের বিদ্যুৎ খাতে রাশিয়া অনেক বিনিয়োগ করেছে এবং এটা অব্যাহত থাকবে। কৃষি ও মৎস্য উন্নয়নের সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও উভয় দেশ সম্মত হয়। বণিজ্যিক ভিত্তিতে শাক-সবজি চাষে রীতিমত বৈপ্লবিক অগ্রগতি হয়েছে । কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানিতে রাশিয়ার সহযোগিতা চান তিনি। কৃষকের উৎপাদন খরচ হ্রাসের লক্ষ্যে সরকার ডিএপি সারের মূল্য কেজিতে ৯ টাকা করে কমিয়েছে বলে জানান তিনি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক অনেক দিনের। দু’দেশের এ সম্পর্ক রাজনীতি, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। রাশিয়া সরকার বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে। অন্য শিল্প-বাণিজ্যের প্রসারেও রাশিয়া বিনিয়োগ করছে। আর ভবিষ্যতে দু’দেশের সুসম্পর্কের মাধ্যমে এসব বিনিয়োগ কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, রাশিয়া যেসব দেশ থেকে আলু আমদানি করে এর মধ্যে বাংলাদেশের আলুর মান ভালো। এক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুজীবের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ যেসব কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি করতে চায় তার একটি তালিকাও চেয়েছেন রাষ্ট্রদূত। রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশেকে স্বাগত জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রাউন ড্রাউট ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে আলু আমদানিতে রাশিয়ার দেয়া সাময়িক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশের উদ্বৃত্ত আলু রপ্তানির জন্য রাশিয়া সম্ভাবনাময় বাজার । বাংলাদেশের কৃষি বিভাগ আলু ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। কন্ট্রাক্ট গোরয়ার্সদের মাধ্যমে রপ্তানীর জন্য কৃষিজাত পন্য উৎপাদন করা হচ্ছে, ফলে এর মধ্যে ক্ষতিকর কোন উপাদান থাকার আশংকা কম। এছাড়া অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে রাশিয়া আবারও বাংলাদেশ থেকে আলুসহ অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখায়।
প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন বৈদেশিক বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান আলেকজেন্ডার মোসকালেংকো (Alexander Moskalenko, Head of Foreign Trade Department); পোটাপোভ মিখাইল পেটরোভিস, জেনারেল ডাইরেক্টর (Potapov Mikhali Petrovich,General Director, jsc Prodintorg)