ময়মনসিংহ : মানুষের দোড়গোড়ায় উত্তম স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ বিগত ২৫ বছর ধরে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভালো মানুষ, ভালো ডাক্তার হিসেবে মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি. বাংলাদেশের একমাত্র কমিউনিটি বেজড্ মেডিক্যাল কলেজের রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সাফল্যের শুরু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। তিনি ১৯৭৪ সালে ‘জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান’ প্রতিষ্ঠা করেন। ’৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ’ গঠনের আদেশ স্বাক্ষর করেন । ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে দেশে প্রথম জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে। প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে মোট ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কাজ হাতে নেয়। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করা হয় কিডনি, ক্যান্সার ও নিউরোলজিসহ বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট। এ ছাড়া চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে ।
মন্ত্রী আরো বলেন, ২০০১ সালে সরকারের পরিবর্তন হয় ২০০৫ সাল টানা পাঁচ বছর স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক অবনতি ঘটায়। ২০০৯-এ গণমুখী স্বাস্থ্যনীতির ধারায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একবিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে স্বাস্থ্যকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা শুরু, তা গত এগারো বছরে বিকশিত হয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়; বিশ্বে তা এক মডেল, অনুশ্রেয় মানদন্ড।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে গতিশীল করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ নামে দুটি নতুন বিভাগ সৃষ্টি করা হয়েছে। মা ও শিশুস্বাস্থ্য রক্ষায় প্রাথমিক সেবা প্রদানে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন। স্বাস্থ্যসেবা রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের সব প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত জালের মতো বিস্তৃত সেবা কেন্দ্র এবং সেবাদানকারী বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকে একটি মজবুত টেকসই কাঠামোর ওপর দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছে। ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করে সনদ দিয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা আজ সুস্থ জাতি হিসেবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছি। মাতৃমৃত্যু হার, শিশুমৃত্যু হার কমিয়ে অর্জন করেছি আন্তর্জাতিক সম্মান; পেয়েছি এমডিজি পুরস্কার, সাউথ সাউথসহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। বিশ্বের ২৬তম নারী নেত্রী এবং ৩ জন সৎ রাট্রনায়কের এক জন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার হাত ধরে ২০২১ সালের মাঝে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মাঝে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্নের বাস্তবায়নের পথে সুস্থ-সবল জাতি গঠনের উদ্দেশ্যে দেশের স্বাস্থ্য সেবা অগ্রসর হচ্ছে দ্রুতগতিতে। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে, এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মির্জ্জা মানজারুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. শরিফ আহমেদ, মো. ইকরামুল হক টিটু, মেয়র ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন, ডা. মতিউর রহমান- সভাপতি স্বাধিনতা চিকিৎসক পরিষদ, জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।