ফারুক আলম (লালমনিরহাট প্রতিনিধি) : গত কিছু দিনের টানা ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে বোরো বীজতলা বিবর্ণ রঙ ধারন করেছে। যার দরুণ আসছে বোরো চাষাবাদ নিয়ে বেশ আতঙ্কিত লালমনিরহাট জেলার কৃষকগণ।
আমরা জেনেছি, ভালো ফসল ফলানোর জন্য পু্ষ্ট বীজ এবং পরিপুষ্ট চারার বিকল্প হতে পারেনা। ভালো ফসলের আশায় বোরো চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করে পরিচর্যা শুরু করছেন কৃষকরা। কিন্তু টানা শীতের ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে কোথাও কোথাও বীজ অঙ্কুরিত হচ্ছেনা, আবার কোথাও বীজতলা হলুদাভাব, বিবর্ণ হয়েছে। কোথাও কোথাও চারাগাছগুলি মরতে শুরু করেছে। লালমনিরহাটে হিমবাহ শুরু হয়েছে গত ১৫ ডিসেম্বর থেকেই। আজ থেকে গত দিন গুলোতে সূর্য দেখা দিয়েছে মাত্র ঘণ্টাকয়েকের জন্য। যার ফলে কৃষিখাতে উকি দিচ্ছে মহাবিপর্যয়।ভীত হয়ে পড়ছেন সাধারণ কৃষককূল।
আদিতমারী উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক খোশ মামুদ এগ্রিনিউজ২৪.কম কে জানান, নিজের প্রায় তিনবিঘা জমি এবং বর্গা নেয়া ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষের জন্য উন্নত জাতের ১০ কেজি বীজ দিয়ে বীজতলা তৈরী করেন। চারা গাছগুলো বেশ পুষ্ট হতে থাকলেও, গত কিছু দিনের হীমবাহেরা কারণে বিবর্ণ হয়ে গেছে তার বীজতলা। বেশকিছু চারাগাছ মারা গেছে। যার দরুণ ৮ বিঘা জমির বোরোর চাষাবাদ হুমকির মুখে। এমতাবস্থায় কৃষিবিভাগের কারোর-ই দেখা মিলছেনা বলে জানান, খোশ মাহমুদ।
গ্রামের ঘুরে কৃষক ইয়াকুব আলী, নুরল হক ও আলম মিয়ার সাথে কথা বলে,খোশ মাহমুদের দেয়া তথ্যেরই সত্যতা মিলে। লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে মেলে একই রকম তথ্যচিত্র।
এ সম্পর্কে আদিতমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আলী নুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বীজতলায় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। দুই চারদিন রোদ পেলে বোরো বীজতলায় বড় ধরনের কোন সমস্যা হবে না।
লালমনিরহাট কৃষি অধিদফতরের উপ পরিচালক বিদু ভূষন রায় বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় বোরো চাষাবাদের জন্য দুই হাজার ৫শত হেক্টর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বীজতলা তৈরি হয়েছে দুই হাজার চারশত হেক্টর জমিতে। যা চলমান অবস্থায় রয়েছে। শীত বা কুয়াশা থেকে বোরো বীজতলা রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখা অথবা বীজতলায় সেচ দিয়ে চারাগাছের পাতা ও ডগা থেকে কুয়াশার ঠান্ডা পানি ফেলে দিতে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।