জামালপুর ( সরিষাবাড়ী): দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশব্যাপী উন্নত ও অধিক ফলনশীল সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এক সময় ভোজ্য তেল হিসেবে সরিষাই প্রধান ছিল। সরিষা থেকে শুধু তেলই নয়, এর থেকে পুষ্টি সমৃদ্ধ খৈল পাওয়া যায়। সরিষা হতে যে খৈলে হয় তাতে প্রায় ৪০ শতাংশ আমিষ থাকে। এই খৈল গরু ও মহিষের জন্য খুব পুষ্টিকর খাদ্য, যা আমাদের মৎস্য ও পশু খাদ্য হিসেবে বেশ চাহিদা রয়েছে। দেশে তৈলবীজ চাষের এলাকা বৃদ্ধি ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে সব ধরনের সহায়তা করবে সরকার।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলায় সতপোয়ার সরিষাবাড়ী গ্রামে উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা-১৪ আবাদ বাস্তবায়নে “মাঠ দিবস” এ এসব কথা বলেন। উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষার-১৪ ফলাফল কতটা গ্রহণযোগ্য ও আশানুরূপ তা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করতে দিবসের আয়োজন। এর আগে মন্ত্রী সরিষার মাঠ পরদর্শন করেন এবং উৎপাদন দেখে অবিভূত হন। মন্ত্রী কৃষি যন্ত্র ক্রয়ের জন্য সবাই একক অথবা যৌথভাবে প্রস্তুত হওয়ার কথা বলেন। মাথাপিছু ভোজ্য তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী নতুন নতুন তৈল বীজের জাত উদ্ভাবন করে, ব্যাপক হারে আবাদ করতে হবে। বারি উদ্ভাবিত এই জাতের সরিষার ফসল ৭৫-৮০ কর্তন যোগ্য হয়। প্রতি হেক্টরে ১.৪-১.৬ টন ফলন পাওয়া যায়। আমন ধান কাটার পর স্বল্পমেয়াদি এ জাতটি চাষ করে বোরো ধান রোপণ করা যায়।
তৈলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধিতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উন্নত বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তৈলবীজ তথা সরিষা উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, সরিষাবাড়ীতে মোট ৪ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে এই সরিষা চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন যা হতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন তেল উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উপজেলার সরিষা বাড়ী গ্রামে এ মাঠ দিবসের আয়োজন করে।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, সংসদ সদস্য ইঞ্জি. মোজাফ্ফর আহমেদ, এপিএ পুলের সদস্য মো. আব্দুল হামিদ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ। বাংলাদেশ কৃষিগবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলার চেয়াম্যান এবং আওয়ামী লীগ এর নেতৃবৃন্দ।