চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: মেরিন ফিশারিজ একাডেমিকে আন্তর্জাতিক মানের মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমুদ্রসম্পদ ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানরূপে গড়ে তুলতে সরকার প্রায় ৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণের মান আরও উন্নয়নের জন্য কম্পিউটারবেইজড অত্যাধুনিক সিমুলেটর সংগ্রহের জন্য নতুন একটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হচ্ছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রামে মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৩৮তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘গ্রাজুয়েশন প্যারেড-২০১৯’ ও সার্টিফিকেট বিতরণি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু এমপি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার টেকসই আর্থসামজিক উন্নয়নের জন্য সাগর, মহাসাগর ও সামুদ্রিক সম্পদের আহরণ ও সংরক্ষণে বর্তমান সরকার নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপকে কাজে লাগিয়ে বিশাল সমুদ্রের মৎস্যসম্পদ আহরণ, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ এবং জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও পরিবেশ দূষণ রোধে মেরিন ফিশারিজের ক্যাডেটদেরকে সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি জানান, ক্যাডেটদের অনুকূলে নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক Continuous Discharge Certificate (CDC) ইস্যুর ফলে সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজে চাকুরি লাভের পথ সুগম হওয়ায় একাডেমির ২৭তম ব্যাচ থেকে ৩৭তম ব্যাচের মোট ৪৪০ জন ক্যাডেট অনুকূলে CDC ইস্যুর প্রজ্ঞাপন জারি হয় এবং এসব ক্যাডেটদের মধ্যে ৮৫% ক্যাডেট CDC প্রাপ্ত হয়ে বাণিজ্যিক জাহাজের চাকুরিতে যোগদান করেছেন। এছাড়াও ক্যাডেটদের বাণিজ্যিক জাহাজে চাকুরি এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য সুবিধার্থে বৈদেশিক ভাষা শিক্ষার অংশ হিসেবে ফ্রান্স ও চীনের ভাষা শিক্ষার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, এবং মেরিন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ হতে ক্যাডেটদেরকে ০৪ বছর মেয়াদী বিএসসি (অনার্স) ইন নটিক্যাল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন ফিশারিজ ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী ক্যাডেটদেরকে কঠোর পরিশ্রম, সময়ানুবর্তিতা, সততা, মূল্যবোধ এবং দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “তোমাদের সহযোগিতায় সমুদ্রসম্পদ আহরণ আরো বৃদ্ধি পাবে যা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করবে এবং একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্লু ইকোনোমির স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবে”।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ এবং মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মাসুক হাসান আহমেদ।
উল্লেখ্য, এ বছর নটিক্যাল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন ফিশারিজ বিভাগ হতে ০৬ জন মহিলা ক্যাডেটসহ মোট ৫৮ জন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেছে। নারী শিক্ষার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনার একটি ধাপ হিসেবে এ একাডেমিতে মেরিন ফিশারিজ ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে মহিলা ক্যাডেটদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য ভর্তি করা হচ্ছে এবং ৩২তম ব্যাচ থেকে ৩৭তম ব্যাচ পর্যন্ত মোট ৪২ জন মহিলা ক্যাডেট এ একাডেমি হতে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। একাডেমি হতে এ যাবৎ উত্তীর্ণ প্রায় ১৭০৪ জন ক্যাডেট দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত দক্ষতা এবং সুনামের সাথে চাকুরি করছেন।