রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

ভেড়ার জাত উন্নয়ন উপকূলবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক হবে – খুবি উপাচার্য

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেছেন, আমাদের দেশে কিছুদিন আগেও প্রয়োজনীয় গরুর যোগান ছিল না। তখন পার্শবর্তী দেশ থেকে আমদানি নির্ভর ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গরু আমদানি বন্ধ থাকার পরও দেশ এদিকে স্বনির্ভর। বিগত কয়েক বছরেই ঘরে ঘরে গরুর খামার গড়ে উঠেছে। ফলে দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণে সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। তবে ছাগল এবং ভেড়ার উৎপাদন সেই অর্থে বাড়েনি। এখন খাসির মাংসের যে মূল্য তাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। ছাগল পালনে যে সব সমস্যা রয়েছে সে তুলনায় ভেড়া পালনে সুবিধা বেশি। দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের ঘের প্রবণ এলাকায় ভেড়ীবাঁধে বিচরণ করে ভেড়া খাদ্য অন্বেষণ করতে পারে। ভেড়া অন্য কোনো ফসল বা গাছের চারার তেমন কোনো ক্ষতি করে না। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে ভেড়ার জাত উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধির যে গবেষণা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে তা খুবই সময়োপযোগী এবং এর ফলাফল ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, গ্রামের মহিলারাই ভেড়া পালনের কাজে নিয়োজিত হতে পারেন এবং এটা বাড়তি একটি কর্মসংস্থানের পন্থা হতে পারে। ভেড়ার মাংস ভবিষ্যতে বিদেশে রপ্তানিও সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভেড়ার জাত উন্নয়ন ও প্রতিপালনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. রায়হান আলী, গবেষণা সেলের পরিচালক প্রফেসর এ কে ফজলুল হক এবং জেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা এস এম আউয়াল হক। পরে টেকনিক্যাল সেশনে সভাপতিত্ব করেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. সারওয়ার জাহান এবং প্রকল্পের প্রারম্ভিক বিষয়সহ উদ্দেশ্য ও কারিগরি দিক নিয়ে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম।

প্রকল্পের প্রেক্ষিত তুলে ধরে সূচনা বক্তৃতা করেন কো-ইনভেস্টিগেটর প্রফেসর ড. মো. সফিকুল ইসলাম। মূল নিবন্ধে গবেষণা প্রকল্পের বিভিন্ন কলাকৌশল তুলে ধরে বলা হয়, ৩ বছর মেয়াদি সরকারি সহায়তায় খুলনার দাকোপ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর এবং বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় প্রাথমিক জরিপ চালানোসহ চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া থেকে গাড়ল জাতের ভেড়ার সাথে স্থানীয় ভেড়ার প্রজননের মাধ্যমে জাত উন্নয়ন, খাদ্য ও প্রতিপালনের মাধ্যমে মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি, উপকূলীয় জলবায়ু ও পরিবেশের সাথে অভিযোজনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের উপর এই প্রকল্পে গবেষণা পরিচালনা করা হবে।

প্রারম্ভিক এই কর্মশালায় অভিলক্ষ্য ব্যাখ্যা করে বলা হয় ভেড়া চাষের মাধ্যমে মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি, গ্রামীণ জনপদের কর্মসংস্থান এবং মাংস রপ্তানির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হবে। এ সময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রকল্প এলাকার কৃষক ও খুলনা পশুসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 3538 times!

Check Also

শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হবে – সিকৃবি ভিসি

সিকৃবি সংবাদদাতা: সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের …