শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

সংসদে সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার দক্ষিন খুলনার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির অবশেষে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী । তিনি সংসদে জানান, সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি মাস্টারপ্লানের কাজ শুরু করেছে। মাস্টারপ্লান চূড়ান্ত হওয়ার পর প্লানের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার সুন্দরবনের কোলে বঙ্গোপসাগরের পাদদেশে গোলখালীতে আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী সংসদকে অবহিত করেন। তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে পর্যটন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষে সরকার বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র এবং আগত দেশি বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সংসদে বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের আলোচনার জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন খুলনা-৬ আসন থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। আক্তারুজ্জামান বাবু সংসদে বলেন, বিশ্বের সব চেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। যা প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের লীলাভূমি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা সুন্দরবনে আসেন। কিন্তু বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ খুলনার গোলখালীতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়নি। ফলে সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি ওই এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য জানা থেকে পর্যটকরা হচ্ছেন বঞ্চিত ।

খুলনা-৬ নির্বাচনী এলাকার বর্ণাঢ্য চিত্র তুলে ধরে সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, কয়রার গোলখালীতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে সেখান থেকে সুন্দরবনের সৌন্দর্য্যকে উপভোগের পাশাপাশি পাইকগাছা-কয়রার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পুরাকীর্তিগুলো জানা ও দেখার সুযোগ হবে। পাইকগাছা উপজেলার প্রবেশ করেই মহাকবি মাইকেল মধুসুদনের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের পাড়ে কপিলমুনিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র রয়েছে। সেখানে রয়েছে রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু বৃটিশ আমলে আধুনিক হাসপাতাল ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলি গ্রামে রয়েছে জগৎ বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়) এর গ্রামের বাড়ি। কয়রা উপজেলার আমাদিতে শত শত বছরের পুরানো মসজিদকুড় মসজিদ। কয়রার বেদকাশীতে আছে রাজা প্রতাপাদিত্যের জমিদার বাড়িসহ নানা স্থাপনা। ফলে পুরো এলাকাজুড়ে পর্যটন জোন গড়ে তোলা হলে চিংড়ির পাশাপাশি পর্যটন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের সম্ভবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, প্রতিমন্ত্রী বঙ্গোপসাগরের পাদদেশে সুন্দরবনের কোলঘেষে গোলখালীতে আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্তমান সরকারও পর্যটন সপৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষে কাজ শুরু করেছে। সম্ভাবনাময় এ অঞ্চলে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমনে কর্মসংস্থানের পাশাপাশী বৃদ্ধি পাবে সরকারের রাজস্ব আয় ।

This post has already been read 3867 times!

Check Also

কর্নফুলী নদী তীরে তরুণদের দাবি “জীবাশ্ম জ্বালানি নয়, পৃথিবী বাঁচান”

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: আজারবাইজানের বাকুতে শুরু হওয়া কপ২৯ সম্মেলনের প্রাক্কালে বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন আইএসডিই (Integrated Social …