নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে এসএমই নীতিমালা ২০১৯-এ গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নীতিমালার অধীনে ওয়ার্কিং কমিটিসমূহ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় এসএমই উন্নয়ন পরিষদ। এ সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা যাতে সহজে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ পেতে পারেন সেজন্য ঋণ বিতরণ পদ্ধতি সহজ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রনালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় পরিষদের সভাপতি শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন সভাপতিত্ব করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ কমিটির সদস্যগণ সভায় বক্তৃতা করেন। সভায় এসএমই শিল্পের উন্নয়নে শিল্প সচিবের সভাপতিত্বে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির সভায় গৃহীত ১১টি স্বল্পমেয়াদী কার্যক্রমের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এবং এসকল বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
শিল্প মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের ৭৮ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাগণ নিজেদের জন্য আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির সঙ্গে অন্যের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। এ খাতের উদ্যোক্তাগণ শতভাগ সততার সাথে কাজ করছে। তাদের জন্য ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করা হলে দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাত আরো শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী ব্যাংকগুলোকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনার আহবান জানান। মন্ত্রী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জামানতের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা না করে তাদের পারফরমেন্স বিবেচনা করে ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংকগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সীমাবদ্ধ না রেখে সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গ্রামকে শহরে পরিণত করতে স্থানীয় কাঁচামালভিত্তিক শিল্পের বিকাশে সেখানে অবস্থিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোর জন্য পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এসএমই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ পরিশোধের হার শতভাগ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করা হলে ব্যাংকগুলো বেশি লাভবান হবে।
সভায় এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, এসএমই নীতিমালা ২০১৯-এ দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে অর্থপ্রাপ্তি, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, বাজার, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, ব্যবসা সহায়ক সেবা এবং তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিতের ওপর স্পষ্ট নির্দেশনা করায় এসকল বিষয় বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম এসএমই ইনকিউবেশন সেন্টার সুবিধা তৈরিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় প্রণীত শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারকে অনুসরণ করার পরামর্শ প্রদান করেন। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ১১৫টি ট্রেডে ৩৬০ ঘণ্টার শর্টকোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কারিগরগণ প্রয়োজন অনুসারে এসকল প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে পারেন।
সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মো. আবু রায়হান আলবেরুনী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম রেজনু, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আরিফুর রহমান অপু, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল মনসুর, , বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম হুমায়ূন কবীর, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আফজাল হোসেন, বিডা’র নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন, পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশাররফ হোসেন, নাসিবের সভাপতি মির্জা নূরুল গনি শোভন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব কাজী ফরিদ উদ্দীন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. সাহাব উদ্দীন প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।