মো. সাজ্জাদ হোসেন: পোল্ট্রি বীমা বিষয়ক নীতিমালা (Poultry Insurance Policy) অনুমোদিত হয়েছে ১৯৯৯ সালে! ২০১৮ সালে সারাদেশে মোট ৩টি বীমা কোম্পানী কর্তৃক ৬টি পলিসিও বিক্রি হয়েছে- এমন দাবি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (IDRA) অথচ এ বিষয়ে পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট সংগঠন কিংবা সাধারণ খামারিরা কিছুই জানেন না। ফলে পোল্ট্রি বীমার সুবিধা পাচ্ছেনা শিল্প সংশ্লিষ্টরা।
অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ‘পোল্ট্রি বীমা’ কেন চালু হচ্ছেনা সে বিষয়ে খোঁজ নিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে ‘পোল্ট্রি বীমা’ চালু থাকার বিষয়টি সম্প্রতি জানতে পারে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। এ প্রসঙ্গে বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন- পোল্ট্রি খামারিদের পুঁজির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোল্ট্রি বীমা চালু করার জন্য দীর্ঘদিন থেকেই সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল বিপিআইসিসি’সহ পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।
চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এম.পি, ‘চ্যানেল আই’ -এর ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ‘পোল্ট্রি বীমা’ চালুর আশ্বাস দেন- যার ফলশ্রুতিতে গত ০৫/০৯/২০১৯ তারিখে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটি পত্র প্রেরণ করা হয় (স্মারক নং- ‘এসিডি (পলি)/৩৬/২০১৯-৪৪৯৭’) এবং পোল্ট্রি বীমার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত জানতে চাওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকও এ বিষয়ে ইতিবাচক মতামত প্রদান করে।
মসিউর বলেন, এতটুকু অগ্রগতি সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য ছিল কিন্তু পরবর্তী অগ্রগতি সম্পর্কে কিছ্ইু জানতে পাচ্ছিলাম না। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমরা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের স্মরণাপন্ন হই এবং তখনই জানা যায় পোল্ট্রি বীমা চালু রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আমাদের জানানো হয়- ২০১৮ সালে ঢাকার কেরাণীগঞ্জে ১টি, গাজীপুরে ১টি, তেজগাঁও এ ১টি, ময়মনসিংহে ১টি ও বাগেরহাটে ২টি পলিসি বিক্রি হয়েছে এবং এর বিপরীতে প্রিমিয়াম বাবদ ১৩১,০৮৯ (এক লক্ষ একত্রিশ হাজার উননব্বই) টাকাও পাওয়া গেছে; তবে কোন দাবী উত্থাপিত হয়নি।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (IDRA) দেয়া তথ্য মতে- গত ১১/০৪/১৯৯৯ তারিখে “Poultry Insurance Policy” শিরোনামে একটি নন-লাইফ বীমা পলিসি অনুমোদিত হয়েছে যা ০৯/০৬/১৯৯৯ তারিখে সার্কুলার নং গরংপ-১৮/৯৯ এর মাধ্যমে সকল বীমা কোম্পানীতে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে উক্ত পলিসিটি কাগজে-কলমে চালু থাকলেও এ বিষয়ে বীমা কোম্পানিগুলোর অনাগ্রহ রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। তবে বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মনে করছে- পোল্ট্রি বীমা সম্পর্কে খামারি ও ব্রিডার ফার্মগুলোরও তথ্য এবং সচেতনতার অভাব রয়েছে এবং এ বিষয়ে কাজ করা দরকার।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি তারিখে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য গোকুল চন্দ্র দাসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বীমা সুবিধা না পাওয়া সম্পর্কিত বিপিআইসিসি’র উদ্বেগের কথা জানানো হয় এবং পোল্ট্রি বীমার সুবিধা খামারিদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর চাপ প্রয়োগের অনুরোধ জানানো হয়।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় ১৯৯৯ সালে প্রণীত ” Poultry Insurance Policy” পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাবনা আকারে বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করবে বিপিআইসিসি। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
বিপিআইসিসি’র সচিব দেবাশিস নাগ জানিয়েছেন Poultry Insurance Policy পর্যালোচনার কাজ চলছে, অচিরেই সংশোধনীটি বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে।