নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারীদের বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেন, হালকা শিল্পোদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী এখাতে শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী গতকাল (১১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘হালকা প্রকৌশল বর্ষপণ্য ২০২০-জাতীয় উন্নয়নের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। এস এম ই ফাউন্ডেশন এ সেমিনারের আয়োজন করে। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন শিল্প সচিব মো. আব্দুল হালিম।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, কর অবকাঠামোতে আমদানিকৃত পণ্যের তুলনায় স্থানীয়ভাবে পণ্য উৎপাদনকারীরা যাতে বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারেন সে বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে আলোচনা করা হবে। দেশীয় মানসম্মত হালকা প্রকৌশল পণ্য ও যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারীদের ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংকগুলোকে আরও উদ্যোগী হবার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়নে এ খাতের অংশীজনদের প্রস্তাবনাসমূহ শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরনের পরামর্শ প্রদান করে বলেন, অত্যন্ত সম্ভাবনাময় শিল্পের উন্নয়নে যা যা করা দরকার সবকিছু করা হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বিটাকের পরিচালক ইহসানুল করিম বলেন, হালকা প্রকৌশল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা বাড়াতে হবে এবং গবেষণার ফলাফল ছোট কারখানা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ৬৭টি ওয়ার্কশপে ১৪৪টি সিএনসি মেশিন ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করছে। সিএনসি মেশিনের অপারেটর থাকলেও ডিজাইনার ও প্রোগ্রামারের অভাব রয়েছে। গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচপ্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বিটাকের অধীনে স্থানীয় হাল্কা প্রকৌশল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বাস্তবায়ন করে তাদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে ইহসানুল করিম উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজি (আইএটি)-এর প্রাক্তন পরিচালক ড. এম কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবদুর রাজ্জাক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচালক পর্ষদ সদস্য এনায়েত হোসেন চৌধুরী সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সারাবিশ্বে হালকা প্রকৌশল শিল্পের প্রায় ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে। এ বিশাল বাজারের সামান্য একটি অংশ ধরতে পারলে সেটি দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখবে। এ শিল্পে বড় বিনিয়োগের ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে বড় বিনিয়োগকারীদের এখাতে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। এনায়েত হোসেন চৌধুরী শুধু যন্ত্রাংশ তৈরি না করে সম্পূর্ণ পণ্য তৈরির দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সেমিনারে মুক্ত আলোচনা পর্বে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির সভাপতি মীর্জা নুরুল গণী শোভন হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়নের ১০ বছরের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের আহবান জানান। দেশের বাইরে কোন ধরণের পণ্যের কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে সেটি নির্ণয়ে এস এম ই ফাউন্ডেশন কাজ করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।