গোলাম মুর্তুজা হোসেন: সারাদেশে দীর্ঘদিন যাবত এদেশের প্রান্তিক খামারিরা নানা রকম অন্যায় ও জুলুমের স্বীকার হয়ে আসছে। একদিকে যেমন উচ্চমূল্যে একদিনের বাচ্চা ও খাদ্য, অন্যদিকে রেডি মুরগী ও ডিমের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে আসছেন এদেশের প্রান্তিক খামারিগণ। সমমনা এসব প্রান্তিক খামারিদের একত্রিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে একযোগে কার্যক্রম চালাচ্ছে “বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামারি পরিষদ”, সংক্ষেপে যেটির নাম দেয়া হয়েছে “বাপোখাপ”। খামারিদের নানান রকম দুঃখ দূর্দশা দেখে কয়েকজন তরুন খামারি সারাদেশের খমারীদের একত্রিত করার অভিপ্রায়ে গঠন করেন ‘বাপোখাপ’।
অতীতে অনেক খামারি সংগঠন গঠিত হলেও খামারিদের অধিকার আদায় হয়নি বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে। সেজন্যই এবার তরুন খামারি সিলেটের স্বেচ্ছাসেবক খামারি স্বাধীন আজাদ ও জামালপুরের স্বেচ্ছাসেবক খামারি কামরুল হাসান মিথুন –এর নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে “বাপোখাপ” এর কার্যক্রম। এরই মাঝে বিভিন্ন বিভাগের স্বেচ্ছাসেবী খামারিদের নিয়ে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠিত হয়েছে।
গত ১৩ মার্চ অনুমোদিত হয় রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ের সমন্বয় কমিটি। উক্ত কমিটিতে বিভাগীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী খামারি দিনাজপুর জেলার গোলাম মর্তুজা হোসেন। রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন যুগ্ম সমন্বয়ক পঞ্চগড় থেকে কাবিল ইসলাম, মাসুদ রানা, পারভেজ লিমন, ঠাকুরগাঁ থেকে যুগ্ম সমন্বয়ক ওবায়দুল ইসলাম, ইমরান সরকার ইমু, আল আমিন, রঞ্জিত কুমার, দিনাজপুর যুগ্ম সমন্বয়ক থেকে মোহাদ্দেস তুহিন, তৌফিক হাসান, শুভ মোল্লা, ওয়াহেদুল ইসলাম, নীলফামারী যুগ্ম সমন্বয়ক থেকে মোবারক হোসেন, রংপুর যুগ্ম সমন্বয়ক থেকে লিমন মিয়া, শাহাদাত হোসেন, রুবেল হোসেন, লালমনিরহাট থেকে যুগ্ম সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান, ওমর ফারুক, কুড়িগ্রাম থেকে যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল বারেক, ইমরান এবং গাইবান্ধা থেকে যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুর রউফ।
দায়িত্বপ্রাপ্ত খামারিগণ প্রতিটি উপজেলা থেকে সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করে এদেশের একেবারে প্রান্তিক খামারি পর্যন্ত পৌছে দিতে চান সংগঠনের ইশতেহার ও সদস্য হওয়ার আহ্বান। সারাদেশের খামারিদের মুক্তির আশায় “বাপোখাপ” তাদের ইশতেহারে প্রকাশ করেছে খামারিদের অন্তরের খবর। একদিন বয়সী বাচ্চার সরকার নির্ধারিত মুল্য অনুসরণ, ন্যায্য মুল্যে খাদ্য, ডিলারদের দৌরাত্ম থেকে মুক্তি, মধ্যসত্ত্বভোগী পাইকারদের হটিয়ে নিজস্ব বিপণন ব্যবস্থা গ্রহণ, সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহনের সুবিধা, বৈদ্যুতিক লাইনকে কৃষি লাইনে রুপান্তরের জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা, প্রাণিসম্পদ অফিসের হয়রানিমূলক কর্মকান্ড বন্ধকরন, বিদেশে রপ্তানির জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন সহ আরো কিছু মুখ্য ও গৌণ উদ্দেশ্য। আর এসব দাবিগুলো বাস্তবায়িত করতেই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে “বাপোখাপ” এর স্বেচ্ছাসেবী খামারিগণ।