এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) -এর নতুন মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হলেন ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মো. আল মামুন স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উক্ত তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বিনা’র মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বর্তমানে পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) পদে চলতি পদে কর্মরত আছেন। শুক্রবার (২০ মার্চ) থেকে উক্ত আদেশ কার্যকর হবে।
কৃষিবিদ ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সফল বিজ্ঞানী, বিশিষ্ট উদ্ভিদ প্রজননবিদ। তিনি বিনা’র উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দীর্ঘ দিন সুনামের সাথে কাজ করেছেন।
ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, জাপান স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৃত্তি নিয়ে ফিলিপাইনের লস ব্যানস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মলিকুলার জেনেটিক্স অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি গবেবষণা কাউন্সিলে এনএটিপি প্রকল্পের বৃত্তি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে মলিকুলার জেনেটিক্স বিষয়ে পোস্ট-ডক্টরাল ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি টাংগাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার বল্লা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১ম শ্রেণিতে এসএসসি, নটরডেম কলেজ হতে ১ম শ্রেণিতে এইচএসসি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃষিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি জেনেটিক্স ও প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. মির্জা বিনায় কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন গবেষণায় উপকূলীয় অঞ্চলের জন্যে লবণাক্ততা সহিষ্ণু বিনাধান-৮, বিনাধান-১০, বন্যা কবলিত এলাকায় জন্যে জলমগ্নতা সহিষ্ণু বিনাধান-১১ ও বিনাধান-১২, সার ও পানি সাশ্রয়ী উচ্চ ফলনশীল জাত বিনাধান-১৭ (গ্রিন সুপার রাইস) সহ অন্যান্য ফসলের মোট ২২টি উন্নত জাতের ফসল উদ্ভাবন করেছেন।
এসব উন্নত জাতের ফসল উদ্ভাবনের ফলে তার অসামান্য অবদানের জন্যে ড. মির্জা গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার কর্তৃক সুপ্রিম সিড স্বর্ণপদক, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক বিল অ্যান্ড মেরিন্ডা গেটস এর অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পে লবণ ও বন্যা সহিষ্ণু ধান উদ্ভাবনে অনন্য অবদান রাখায় ভারতের নয়াদিল্লীতে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্টসহ মোট ৭টি পদকে ভূষিত হন।
তিনি প্রতিষ্ঠানের বায়োটেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে প্রায় ৫ বছর দায়িত্ব পালন করে বায়োটেকনোলজি গবেষণাগারকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন এবং বিগত প্রায় ৪ বছরের অধিক সময় বিনার উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, সভা ও প্রকল্পের গবেষণালব্ধ ফলাফল উপস্থাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্কসহ ১৫টি দেশ সফর করেন। তিনি শ্রীলংকা, মায়ানমার ও সিয়েরা লিওনে পরমাণু কৃষি গবেষণায় কনসালট্যান্ট বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন।
এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএস ও পিএইচডি কোর্সে শিক্ষার্থীদের গবেষণা তত্তাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশে ও বিদেশে স্বীকৃত ১৪১টি জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের মলিকুলার ও ফিজওলজিক্যাল মেকানিজম বিষয়ে টেইলর অ্যান্ড প্রান্সিস এ একটি পুস্তকের অধ্যায় প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়াও তিনি বহু আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।