বৃহস্পতিবার , নভেম্বর ১৪ ২০২৪

রাজশাহীতে পেঁয়াজ আবাদ ও উৎপাদনে রেকর্ড!

মো. আবদুল্লাহ-হিল-কাফি (রাজশাহী) : মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ অন্যতম। মসলা হিসেবে এর ব্যবহার সারা দেশব্যাপী। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে মাত্র কয়েকটি জেলাতেই পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে, এর মধ্যে রাজশাহী জেলা অন্যতম । চলতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভাল দাম, অনুকুল আবহাওয়া, সরকারী সহায়তা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে রাজশাহী জেলায় এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।

জেলায় বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যেখানে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ১৪ হাজার ৯০২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ২২ হাজার ৪১২ মে.টন। অন্যদিকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে পেঁয়াজের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৬০০ হেক্টর কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৯১ হেক্টর জমিতে যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও অধিক এবং গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৮৮৯ হেক্টর বেশি। ইতোমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজের উত্তোলন শেষ হয়েছে এবং চারা পেঁয়াজের কর্তন শুরু হয়েছে। এই পেঁয়াজ রাজশাহীর হাটগুলোতে উঠায়, বাজারে আমদানি বেড়ে কমেছে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম। মাঠে বর্তমানে পেঁয়াজের সার্বিক অবস্থা ভাল। চলতি বছর বিগত বছরের তুলনায় অধিক ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে দূর্গাপুর উপজেলার শানপুকুরিয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষী সাহেব আলী এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, ‘তাহেরপুরী আগাম জাতের পেঁয়াজ বাজারে উঠায় পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসছে। অনুকুল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের নিবিড় পরামর্শের  জন্য কৃষকের বিঘাপ্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছে । পুঠিয়া উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়ার কৃষক জনাব আবুল হোসেন বলেন, দাম ভালো পেলে খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৫০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে। রাজশাহীর বানেশ^রের কৃষক জনাব আব্দুল লতিফ জানান, তিনি এবছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে  বীজ শোধন করে পেঁয়াজ চাষ করেন। এবার তিনি বিগত বছরের চেয়ে পেঁয়াজের  উৎপাদন বেশি হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, কৃষিবিদ মো. শামছুল হক বলেন, রাজশাহীতে এবার পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে। পরিপক্ক পেঁয়াজ উঠলে সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি উৎপাদন হবে। তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের অবস্থা ভালো আছে। আগাম জাতের পেঁয়াজ পুরোদমে ওঠা শুরু হয়েছে হাটগুলোতে। এখন আর বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে খেতে হবে না আমাদের।  নির্বিঘেœ পেঁয়াজ উত্তোলন করা গেলে রাজশাহী জেলায় প্রায় ২.৫ লক্ষ মে.টন পেঁয়াজ উৎপাদন সম্ভব হবে যা জেলার মোট চাহিদার প্রায় ৫ গুণ। জেলার প্রায় ৩০ লক্ষ জনগণের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পেঁয়াজ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ লোকের চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।

This post has already been read 4216 times!

Check Also

জলঢাকায় সোনালী ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

বিধান চন্দ্র রায় (নীলফামারী) : নীলফামারীর জলঢাকায় মাঠের যে দিকে চোখ যায়, সেদিকেই সবুজের সমারোহ। …