ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা) : সরকারি সম্পত্তির সঠিক ব্যবহার, স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সহিত জনসেবা নিশ্চিতকরণ, সরকারি রেকর্ড স্থায়ী সংরক্ষণ, সরকারি সম্পত্তির আইনানুগ সুষম বন্টন, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, ডিজিটাল ভূ-সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার সাথে প্রকৃত উপকারভোগীদের সেবা প্রদান করার লক্ষে এক অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে খুলনা জেলা প্রশাসন। সরকারি সম্পদের ছবিসহ তথ্য ভান্ডার তৈরির এই উদ্যোগের ফলে ২০১৯ সালে শ্রেষ্ঠ জেলা হওয়ার গৌরব অর্জন করে খুলনা, মেলে জনপ্রশাসন পদক। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এর নির্দেশনা অনুসারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এর সার্বিক পরিকল্পনা ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প খুলনায় বাস্তবায়ন হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খুলনার অনন্য এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হওয়ায় সারা দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে খুলনার সরকারি সম্পদের ছবিসহ তথ্য ভান্ডার প্রকল্পটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
জানা গেছে, কালেক্টর প্রতিটি জেলায় সরকারের পক্ষে সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ভূমি ও সায়রাতের রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত। আবহমান কাল থেকেই বাংলাদেশের ভূমি সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি এই সেবাগুলো সময়সাপেক্ষ যা অনেকক্ষেত্রে একটি সুবিধাবাদী শ্রেণির উদ্ভব ঘটায়। জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধির ফলে জমির উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। দিন দিন কৃষি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে। এছাড়াও সরকারি খাস জমি, ভিপি জমি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, জলমহাল, হাটবাজার ইত্যাদি অবৈধ দখলে চলে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের স্বল্প সংখ্যক জনবল দ্বারা এত বিশাল পরিমান সরকারি সম্পত্তি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, তদারকী ও রাজস্ব আদায় দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট জমিজমা ব্যক্তি পর্যায়ে রেকর্ডও হয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায়, খুলনা জেলা প্রশাসনের প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এর নির্দেশনা অনুসারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এর সার্বিক পরিকল্পনা ও সরাসরি তত্বাবধানে সরকারি সম্পদেও এ তথ্য ভান্ডার তৈরির এক অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের এ উদ্যোগটির সফল বাস্তবায়নে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন নিরলস ভাবে কাজ করে নতুন এই সরকারি সম্পত্তির ছবিযুক্ত অনলাইন ডাটাবেজ তৈরিতে গৌরব অর্জন করেন ।
ফলে খুলনা জেলার সকল উপজেলার অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের ছবিসহ বর্তমান অবস্থার হালনাগাদ রেকর্ড সম্বলিত তথ্য ভান্ডার তৈরি করার পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়। খুলনা জেলার সকল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সার্ভেয়ার, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এবং অফিস সহকারী সহ সকলের আন্তরিক এবং সমন্বিত চেষ্টায় এ অনন্য উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।
দ্রুততম সময়ে নাগরিক সেবা প্রদান এবং সকল ক্ষেত্রে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিবর্তিত ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জেলা প্রশাসক মাঠ পর্যায়ে সরকারের মুখ্য প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন, তাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সকল কাজে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নততর সেবা প্রদানের লক্ষ্যে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
জেলা প্রশাসক, খুলনা ই-সেবার মাধ্যমে দুর্নীতি বন্ধ করে খুলনা জেলার সার্বিক ভূমি ব্যবস্থাকে অনলাইন প্লাটফর্মে আনয়ণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে খুলনা জেলার অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহাল সহ ভূমি সেবা সংক্রান্ত সকল শাখাকে ডিজিটাল শাখায় রুপান্তরিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ভূমি এবং ই-সেবা কার্যক্রমের গতি ত্বরান্বিতকরণ, ই-মিউটেশন প্রক্রিয়া সহজতর, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ সহ শতভাগ ভূমি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে খঝগ সফটওয়্যার তৈরী করা হয় এবং এর মাধ্যমে সীমিত পরিসরে সেবা প্রদান প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। পর্যায়ক্রমে সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট জায়গা জমি, হাট বাজার ও জলমহালের সঠিক সংখ্যা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং শতভাগ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে ছবিসহ ডাটাবেজ প্রস্তুতের কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।
উদ্যোগটি যেসকল ইতিবাচক অবদান রাখছে, তার মধ্যে রয়েছে:- সংস্কার: গতানুগতিক ধারার বাইরে হালনাগাদ ডাটাবেজ তৈরি ও সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাজের ধারায় সংস্কার আনয়ণ। উদ্ভাবন: ভূমি ব্যবস্থাপনায় সেবা সহজীকরণ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ই-সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ছবিযুক্ত ডাটাবেজ ও সফটওয়্যার তৈরী একটি অনন্য সাধারণ, টেকসই ও রেপ্লিকেবল উদ্ভাবন। উন্নততর সেবা: অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের সকল তথ্য ডাটাবেজে সংরক্ষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া তরান্বিত করার সাথে সাথে সেবাপ্রার্থীকে অল্প সময়ে উন্নত সেবা প্রদান সম্ভব হয়।
অনন্য ধারনা অথবা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত নতুন প্রস্তাব প্রণয়ন:- সমগ্র খুলনা জেলার সকল অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের সামগ্রিক তথ্যের ছবিযুক্ত হার্ডকপি সংরক্ষণ ও সফটওয়্যারে আর্কাইভকরণের মাধ্যমে ই-সেবা প্রদান। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার/ ই- গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠা: নিজস্ব ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে নাগরিকের আবেদন ও অভিযোগ গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা প্রদান করা। দক্ষতা বৃদ্ধি: স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে সেবা প্রদান এবং দ্রুততম সময়ে কাজ সম্পাদন প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ। দুর্নীতি হ্রাস: ডাটাবেজ তৈরি এবং সফটওয়্যারের মাধ্যমে ই-সেবা প্রদান করে ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য ও দুর্নীতি অনেকাংশে লাঘব। প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন: ছবিযুক্ত ডাটাবেজ এবং খঝগ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে ভূমি ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং শতভাগ রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন করা। প্রযুক্তিগত পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উৎকর্ষ সাধন: নতুন সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে খুলনার ভূমি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধন। ই-মিউটেশন প্রক্রিয়ায় সহজিকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
প্রকল্পের অগ্রাধিকার ও উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে, ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে খুলনা জেলার সমগ্র ভূমি ব্যবস্থাপনাকে পর্যায়ক্রমে ডিজিটালাইজড করা। শতভাগ ভূমি রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করা। সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখলদার মুক্ত করা। সরকারি সেবার ডিজিটাল পদ্ধতির প্রতি সেবা গ্রহিতাদের উদ্বুদ্ধ করা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে নথি সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রচলিত ধারার সমান্তরালে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করা। সেবাগ্রহণের জন্য সেবাগ্রহিতাদের অফিসে আসার সংখ্যা (time, cost, visit) কমানো। আর্কাইভের মাধ্যমে জনগণের জন্য তথ্যের অবাধ প্রবাহ সুনিশ্চিত করা। সরকারি সম্পত্তির সকল তথ্য ডাটাবেজে সংরক্ষণের মাধ্যমে সেবা প্রদান প্রক্রিয়া তরান্বিত করা এবং হয়রানি বন্ধ করা।
উদ্যোগের ফলে সৃষ্ট প্রভাব/পরিবর্তন: এ উদ্যোগের ফলে অর্পিত, পরিত্যাক্ত, জলমহাল, হাটবাজার এবং খাস সম্পত্তির ছবিযুক্ত তথ্য টেকসইভাবে সংরক্ষণ এবং সরকারি স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ে সেবা প্রদান নিশ্চিত হওয়ার ফলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় দূর্নীতি হ্রাস পেয়েছে এবং সঠিক উপকারভোগীদের নিকট সেবা পৌঁছানোর পাশাপাশি শতভাগ রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
LSM সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনার ফলে রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেখা গেছে, বঙ্গাব্দ ১৪২৫-১৪২৭ মেয়াদের তুলনায় ১৪২৬-১৪২৮ মেয়াদে ইজারাকৃত জলমহাল থেকে মোট রাজস্ব আদায় ৪০ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্পিত সম্পত্তি দাবী আদায়ের ক্ষেত্রে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের আদায়ের তুলনায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিত্যক্ত সম্পত্তি দাবী আদায়ের ক্ষেত্রে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের মোট দাবী ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৬শ’ টাকার তুলনায় আদায় ৭ লাখ ৯৯ হাজার ৪২ টাকা অর্থাৎ আদায়ের হার ২১৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সালে ইজারাকৃত হাটবাজারের রাজস্ব আদায় ৪কোটি ৫৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯শ’ ৫৩ টাকা এবং বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সালে রাজস্ব আদায় ৪কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার ৫শ’ ৬০ টাকা। গত এক বছরে ইজারাকৃত হাটবাজারের রাজস্ব আদায় ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রকল্পের কার্যক্রম গ্রহণের ফলে জনগণ ভূমি বিষয়ক আবেদন ঘরে বসেই করতে পারছে তাই তাদের সময়ের অপচয় ও খরচ দুটোই কমেছে। হয়রানি বন্ধ হচ্ছে, অতিদ্রুত সেবা পাচ্ছে। স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নথি আর্কাইভ করায় নথি বিনষ্টের সম্ভবনা কমেছে। এক ক্লিকেই জমির চিত্রসহ জমির সার্বিক অবস্থা, লীজ কেস সংক্রান্ত মামলা এবং ইজারা গ্রহীতাদের দ্বারা শর্ত প্রতিপালন সংক্রান্ত তথ্য সন্নিবেশিত থাকায় সহজেই লীজ নবায়ন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাচ্ছে। নাম পরিবর্তন, মেরামত, ইজারা নবায়ন, পাকা/কাঁচা ঘর নির্মান, জমির শ্রেণি পরিবর্তন সহ অন্যান্য সকল সেবার জন্য আবেদন করার সুযোগ প্রদান করায় ভূমি সংক্রান্ত সার্বিক সেবার একটি অনন্য প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে। উক্ত সফটওয়্যারে রিপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যার মাধ্যমে জমির অবস্থান, লীজকৃত মূল্য, বর্তমান ইজারাদার, জমির শ্রেণি, লীজের মেয়াদ এবং সরকারি পাওনা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। অনলাইন সেবার প্রতি গুরুত্ব দানের মাধ্যমে চধঢ়বৎষবংং ঙভভরপব প্রতিষ্ঠা ও ই-গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটি শাখায় পর্যাপ্ত সংখ্যক কম্পিউটার, স্ক্যানার, প্রিন্টার সরবরাহ করা হয়েছে এবং ইনডোর ডেকোরেশনের মাধ্যমে কর্মপরিবেশের আধুনিকায়ন হয়েছে এবং কর্মচারীদের কাজের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উদ্যোগটির টেকসই অবস্থা:-অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে একটি টেকসই পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে নথি সংরক্ষণ একটি স্থায়ী পদ্ধতি ফলে সাধারণ নথি বিনষ্ট হলেও সফটওয়্যারের মাধ্যমে নথির স্থায়ী সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। অনলাইনে ভূমিসেবা প্রদানের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে পর্যায়ক্রমে একটি স্থায়ী চধঢ়বৎষবংং ঙভভরপব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ছবিযুক্ত হালনাগাদ ডাটাবেজ একটি সম্পূর্ণ নতুন স্থায়ী ও টেকসই পদ্ধতি যা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে। উদ্যোগটি সারা দেশে বাস্তবায়িত হলে সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির যথাযথ ও টেকসই সংরক্ষণ, ব্যবহার নিশ্চিতকরণ সহ শতভাগ রাজস্ব আদায় নিশ্চিত হবে।
২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো ঝউএং এর যথাযথ বাস্তবায়ন। আর এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকারি স্বার্থে সংশ্লিষ্ট জায়গা-জমি, হাটবাজার ও জলমহালের ছবিযুক্ত ডাটাবেজ একটি অনন্য সংরক্ষণ পদ্ধতি যার মাধ্যমে এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং শতভাগ রাজস্ব আদায় নিশ্চিত হবে। ই-সেবার মাধ্যমে দক্ষ ও জবাবদিহিতামূলক ভূমিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো অপরিহার্য জেলা প্রশাসন, খুলনা সে সকল বিষয় নিয়ে পরিকল্পনামাফিক কাজ শুরু করে। প্রথমেই একটি সফটওয়্যার তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হয়, যাতে খুলনা জেলার সমস্ত অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের ছবিসহ তথ্য সন্নিবেশিত হয়। অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যাক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের ছবি সহ বর্তমান অবস্থার হালনাগাদ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খুলনার অনন্য এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সারা দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। সার্বিক বিষয়গুলো ই-সেবা চালুর একটি প্রক্রিয়া হিসেবে জনকল্যাণমূলক, জবাবদিহিতামূলক ও দক্ষ প্রশাসন গড়ার মাধ্যমে ‘জনসেবার জন্য প্রশাসন’ প্রত্যয়টিকে পূর্ণতা দান করেছে।
এছাড়াও এর মাধ্যমে সঠিক উপকারভোগীদের মধ্যে খাস জমি/ভিপি জমি স্বচ্ছতার সাথে বন্দোবস্ত/লীজ দেয়া নিশ্চিত করা। এতে একদিকে যেমন সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত হবে, অন্যদিকে সমাজের ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ কমে যাবে। সরকারের রাজস্ব আয়ের বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের প্রত্যক্ষ উন্নয়নে এটি সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
পরিশেষে বলা যায় যে, খঝগ সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ ব্যবহারে ভূমি নিয়ে জটিলতা নিরসন হবে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি দূর্নীতিমুক্ত ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে বিশাল অবদান রাখবে।
মিথ্যা মামলা, অবৈধ দখলদার নিশ্চিহ্ন হওয়ার পাশাপাশি আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
প্রস্তুতকৃত ডাটাবেইজ সমূহের মধ্যে ব্যবহৃত সৃজনশীল পদ্ধতি সমূহের মধ্যে খুলনা জেলার সকল উপজেলা থেকে সরেজমিনে অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের ছবিযুক্ত ডাটাবেজ তৈরি করা হয় এবং তা পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল উদ্ভাবনী ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে (খঝগ) সফটওয়্যার তৈরী করা হয় এবং স্বচ্ছতার সাথে, সহজভাবে ও দ্রুততম সময়ে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ই-সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হয়। অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহাল সমূহের ছবিসহ বর্তমান অবস্থা এবং ইজারার তথ্য, দখল সংক্রান্ত তথ্য, মামলার তথ্য, ইজারা গ্রহীতাদের দ্বারা শর্ত প্রতিপালনের তথ্য হালনাগাদ রেকর্ড সহ সন্নিবেশ করণ। অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের জমিগুলোর এসএ দাগের সাথে পরতাল করে আরএস দাগ ও খতিয়ান বের করে হালনাগাদ তথ্য বের করা। খঝগ সফটওয়্যার এর মাধ্যমে নাম পরিবর্তন, মেরামত, ইজারা নবায়ন, পাকা/কাঁচা ঘর নির্মাণ, জমির শ্রেণি পরিবর্তন সংক্রান্ত আবেদন গ্রহণ এবং স্বচ্ছতার সাথে দ্রুত সময়ে কার্য সম্পাদন করা। ভূমি ব্যবস্থাপনায় ই-ফাইলিং কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিটি শাখায় পর্যাপ্ত সংখ্যক কম্পিউটার, স্ক্যানার, প্রিন্টারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করা।
প্রকল্প/উদ্যোগ মনোনীত ব্যক্তি/ দল/ প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা/ সম্পৃক্ততার ধরণ:- খুলনা জেলায় টেকসই ভূমিসেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি সংক্রান্ত প্রতিটি শাখাকে পর্যায়ক্রমে ডিজিটালাইজড করার কার্যক্রমটি খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এর তত্ত্বাবধানে বিগত ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পটি জেলা প্রশাসন, খুলনার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
ডিজিটালাইজড রাজস্ব শাখা: টেকসই অবস্থা: অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, খাস জমি ও জলমহালের ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে একটি টেকসই পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে নথি সংরক্ষণ একটি স্থায়ী পদ্ধতি ফলে সাধারণ নথি বিনষ্ট হলেও সফটওয়্যারের মাধ্যমে নথির স্থায়ী সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। অনলাইনে ভূমিসেবা প্রদানের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে পর্যায়ক্রমে একটি স্থায়ী চধঢ়বৎষবংং ঙভভরপব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ছবিযুক্ত হালনাগাদ ডাটাবেজ একটি সম্পূর্ণ নতুন স্থায়ী ও টেকসই পদ্ধতি যা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে। উদ্যোগটি সারা দেশে বাস্তবায়িত হলে সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির যথাযথ ও টেকসই সংরক্ষণ, ব্যবহার নিশ্চিতকরণ সহ শতভাগ রাজস্ব আদায় নিশ্চিত হবে।
ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারের ফ্লো-চার্ট:- ভূমি উন্নয়ন করের তথ্য (ফেব্রুয়ারি/২০২০ পর্যন্ত) গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাধারণের ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পরিমাণ ৮ কোটি ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৬১ টাকা। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাধারণের ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গত ২০১৮-১৯ বছরে সংস্থার ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পরিমাণ ১ কোটি ১৭ হাজার ৮৬৭ টাকা। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সংস্থার ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সাধারণের ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পরিমাণ ৮ কোটি ৮২ লাখ ৭৭ হাজার ৬৯৯ টাকা। গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সাধারণের ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার ৫৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০২০ বছরে সংস্থার ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পরিমাণ ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫৭ টাকা। গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সাধারণের ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে সাধারণের ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে সংস্থার ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বৃদ্ধির হার শূণ্য দশমিক ৬২ শতাংশ।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অর্পিত সম্পত্তির দাবী, আদায় সংক্রান্ত তথ্য এক নজরে দেখা গেছে, সর্বমোট ১০,৯৫২.৬৩ একর জমি ৫০৪১ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১ কোটি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৩শ’ ৫৭ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৬৪২ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ৮২ লাখ ৮৬ হাজার ২২৪ টাকা। এতে আদায়ে হার ৬৫ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ১৯ শতাংশ।
এর মধ্যে খুলনা সদর উপজেলায় ১০৩.০০০৯ একর জমি ২১৩ টি নথিতে ইজারাভুক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ২১ লাখ ৯১ হাজার ২শ’ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ২৪ লাখ ১২ হাজার ২৫০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আদায় হয় ১৮ লাখ ৫৬ হাজার ৪৬৬ টাকা। এতেআদায়ে হার ৭৭ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ২৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
রূপসা উপজেলায় ৫৮৯.৩৬ একর জমি ৬১৮টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৯ লাখ ৮০ হাজার ২শ’ ১ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩৭ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ১ লাখ ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা। এতে আদায়ে হার ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
তেরখাদা উপজেলায় ২০৩.৮৮ একর জমি ১২৮ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৯৯ হাজার ৭শ’ ৮১ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। এতে আদায়ে হার ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ দাড়ায়।
দিঘলিয়া উপজেলায় ৫১০.৯৭ একর জমি ৫০৬ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৮শ’৬০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ২ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৪ টাকা। এতে আদায়ে হার ৪২ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ২০ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ফুলতলা উপজেলায় ২২৩.৬২ একর জমি ২০৩ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৬শ’ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ৬৯ হাজার ৪১৬ টাকা। এতে আদায়ে হার ৫০ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ২৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ডুমুরিয়া উপজেলায় ২৩৭০.৩৫ একর জমি ১০৫৯ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১৩ লাখ ৯ হাজার ৩শ’ ৮৭ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১৮ লাখ ৮ হাজার ২২০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৮ টাকা। এতে আদায়ে হার ৩১ দশমিক ৬১ শতাংশ দাড়ায়।
বটিয়াঘাটা উপজেলায় ১০৭২.৮৫ একর জমি ৪০৩ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১২ লাখ ৯০ হাজার ১শ’ ৭০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৯০০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ১ লাখ ২০ হাজার ৪৯৫ টাকা। এতে আদায়ে হার ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ দাড়ায়।
দাকোপ উপজেলায় ২৪৩৭.৯৩ একর জমি ৬৪৪ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪শ’ ৯০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ৯ লাখ ৩১ হাজার ২৪৫ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৫৬২ টাকা। এতে আদায়ে হার ৯৬ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
পাইকগাছা উপজেলায় ২০৫১.৪০ একর জমি ৮১৫ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ২৩ লাখ ৯ হাজার ৭শ’ ৯০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ২৫ লাখ ১১ হাজার ৯০০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ১৯ লাখ ১ হাজার ৪৪৫ টাকা। এতে আদায়ে হার ৭৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।
কয়রা উপজেলায় ১৩৮৯.২৬ একর জমি ৪৫২ টি নথিতে ইজারাভূক্ত রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৮শ’ ৭৮ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ছিল ১৬ লাখ ১৪ হাজার ৮৮০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট আদায় হয় ২২ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৩ টাকা। এতে আদায়ে হার ১৪১ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং আদায় বৃদ্ধির হার দাড়ায় ৮০ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
পরিত্যক্ত সম্পত্তির দাবী, আদায় সংক্রান্ত তথ্য এক নজরে (ফেব্রুয়ারি/২০২০ পর্যন্ত) মোট কেস নথির সংখ্যা ৬০টি। ইজারা প্রদত্ত কেস নথির সংখ্যা ৩২ টি। মোট পরিত্যক্ত সম্পত্তির পরিমান ৩১.৫৫৮২ একর। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে মোট দাবীর পরিমান ৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৮০ টাকা। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে মোট আদায়ের পরিমান ৩ লাখ ৬৩ হাজার ২শ’ ২২ টাকা। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে মোট আদায়ের হার ৯৬ শতাংশ। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দাবীর পরিমান ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬০০ টাকা। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে আদায় হয় ৩ লাখ ২ হাজার ২২০ টাকা। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে আদায়ের হার ছিল ৮৩ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে আদায় বৃদ্ধির হার ১৩ শতাংশ বেশী।
উপজেলা ওয়ারী হাট-বাজার সংক্রান্ত তথ্য: উপজেলা ওয়ারী মোট কেস সংখ্যা ২ হাজার ৫শ’ ১৫টি। এরমধ্যে খুলনা সদর-৭০৩টি, ফুলতলা-০৫টি, কয়রা-২৪টি, তেরখাদা-২৩৪ টি, রুপসা- নাই, বটিয়াঘাটা- নাই, দিঘলিয়া-১১৫টি, পাইকগাছা-৮১৬টি, ডুমুরিয়া-৫১১টি, দাকোপ-১০৭ টি। মোট জমির পরিমাণ-১০.৫০১৭ একর। বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনে হাট-বাজার হতে রাজস্ব আদায় হয় ৪ কোটি ৯৫ লাখ ১৫ হাজার ১২৯ টাকা। বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনে হাট-বাজার হতে রাজস্ব আদায়-(ফেব্রুয়ারি-২০২০ পর্যন্ত) ৫ কোটি ৭৭ লাখ ৯৪ হাজার ১২৯ টাকা। গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে আদায় বৃদ্ধি-(ফেব্রুয়ারি-২০২০ পর্যন্ত) ৮২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। শতকরা আদায় বৃদ্ধির হার-(ফেব্রুয়ারি-২০২০ পর্যন্ত) ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ।
জলমহালের তথ্য: ২০ একরের ঊর্ধ্বে খুলনা সদরসহ ১০ থানায় জলমহাল সংখ্যা- ১৫৬টি (জেলা পর্যায় থেকে ব্যবস্থাপনা করা হয়)। মোট জমির পরিমাণ ৮০৭০.১একর। বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৩৮ লাখ ২৭ হাজার ৮২৫ টাকা। বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৪৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৭৭ টাকা। গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে আদায় বৃদ্ধি পায় ৯ লাখ ৯২ হাজার ১৫২ টাকা। গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে আদায় বৃদ্ধি হার প্রায় ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। এরমধ্যে খুলনা সদর, দিঘলিয়া ও ফুলতলায় ২০ একরের ঊর্ধ্বের আয়তনের জলমহাল নেই। তবে রূপসা উপজেলায় আছে ৭টি, যার আয়তন ৩১৯. ৫০ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের এখানে আদায় হয় ১৫ হাজার টাকা। তেরখাদায় আছে ১১টি, যার আয়তন ৬১৫.৬১৩৫০০ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় হয় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫শ’ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় নেই। ডুমুরিয়ায় আছে ২৪টি, যার আয়তন ১৩৭৬.১২ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় নেই, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬শ’ টাকা। বটিয়াঘাটায় আছে ১২টি, যার আয়তন ৭৫৮.৬৭ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় হয় ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৭শ’ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৩৬ হাজার ২১৬ টাকা। দাকোপে আছে ২০টি, যার আয়তন ১১৬৯.৩৬ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় হয় ১ লাখ ২১ হাজার ৫শ’ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ১০ লাখ ৮৭ হাজার ২৭৫ টাকা। পাইকগাছায় আছে ৪৮টি, যার আয়তন ২৬৭২.৬২ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় হয় ৩লাখ ৯১ হাজার টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ১২ লাখ ১৮ হাজার ২১৫ টাকা। কয়রা আছে ৩৪টি, যার আয়তন ১১৫৮.২৫ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় হয় ২৭লাখ ৩৬হাজার ১শ’ ২৫ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ১৭লাখ ৫৮হাজার ১শ’ ৭১ টাকা।
২০ একরের নিচে খুলনা সদরসহ ১০ থানায় জলমহাল রয়েছে ২৮৯টি (জেলা পর্যায় থেকে ব্যবস্থাপনা করা হয়)। মোট জমির পরিমাণ ৩৫৩৭.০৬। বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ২১লাখ ৯৩হাজার ৩১৬টাকা। বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৩২লাখ ৩হাজার ৭৪৪ টাকা। গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে আদায় বৃদ্ধি পায় ১০ লাখ ১০ হাজার ৪২৮ টাকা। গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে আদায় বৃদ্ধি হার প্রায় ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এরমধ্যে খুলনা সদর ও ফুলতলায় ২০ একরের নীচে আয়তনের জলমহাল নেই। তবে রূপসা উপজেলায় আছে ৯টি, যার আয়তন ৩৫.০১৬৭০০০ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৩ লাখ ৯৯হাজার ৫শ’ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় নেই। তেরখাদায় উপজেলায় আছে ৭টি, যার আয়তন ১৩৭.৮২ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৩৪হাজার ৭শ’ ৭০ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৩৮ হাজার ১৭৪ টাকা। দিঘলিয়ায় ১টি, যার আয়তন ৩.৪৪২০২০০ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ২২ হাজার ৫শ’ টাকা। ডুমুরিয়া উপজেলায় আছে ৭২টি, যার আয়তন ৮১১.৫৭ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ১লাখ ৪৫হাজার ৬শ’ ৯০টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ২ লাখ ৮৯হাজার ৬শ’ টাকা। বটিয়াঘাটায় উপজেলায় আছে ৬৫টি, যার আয়তন ৬২৮.২৬ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৬ লাখ ৩৬হাজার ৮শ’ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৬লাখ ৫৬ হাজার ৮০০টাকা। দাকোপে আছে ৫৩টি, যার আয়তন ৫৬০.৬৫ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪০১ টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৫ লাখ ৫৬ হ্জাার ৩৮টাকা। পাইকগাছায় আছে ১৯টি, যার আয়তন ৫২৯.৯৮ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৪লাখ ৭৯হাজার ৬৫৯টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৬ লাখ ১৩হ্জাার ৩২টাকা। কয়রায় আছে ৬৫টি, যার আয়তন ৮৩০.৩৩ একর, বঙ্গাব্দ ১৪২৫ সনের আদায় ছিল ৪লাখ ২৬হাজার ৭৯৬টাকা, বঙ্গাব্দ ১৪২৬ সনের আদায় হয় ৬লাখ ২৮হ্জাার ১শ’ টাকা।
সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেট এর তথ্য (ফেব্রুয়ারি-২০২০ পর্যন্ত) : উপজেলা ওয়ারী খুলনা সদরে কেস সংখ্যা ৫৬ টি, ডুমুরিয়া ৩৮৪ টি, বটিয়াঘাটা ৭৮টি, ফুলতলা ৫৮টি, দিঘলিয়া ৫৩টি, পাইকগাছা ৪৩টি, সাতক্ষীরা জেলা ২৪ টি, যশোর জেলা ১৪ টি মিলিয়ে সর্বমোট ৭০৭ টি কেস নথি রয়েছে। ফেব্রুয়ারি ২০২০ সাল পর্যন্ত এই ৭০৭ টি ইজারা কেস নথির মাধ্যমে ৫৬৩.৯৩৫৩ একর জমি ইজারা প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে গত বছরের আদায় ছিল (ফেব্রুয়ারি-২০১৯ পর্যন্ত) ২২ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৭ টাকা। বর্তমান বছরের আদায় (ফেব্রুয়ারি-২০২০ পর্যন্ত) হয় ২৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮১৮ টাকা। গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে আদায় বৃদ্ধি (ফেব্রুয়ারী-২০২০ পর্যন্ত) ১,২২ দশমিক ৫১১ টাকা। শতকরা আদায় বৃদ্ধির হার-(ফেব্রুয়ারী-২০২০ পর্যন্ত) ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।