সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪

দেশে প্রতিদিন ৫৭ কোটি টাকার দুধ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে!

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশে প্রতিদিন প্রায় ৫৭ কোটি টাকার দুধ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে যার মাসিক হিসেবের পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ১৭১০ কোটি টাকা। বুধবার (২৫মার্চ) ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় অফিসে দেশের দুগ্ধ খামার শিল্পকে রক্ষার্থে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি মো. ইমরান হোসেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বর্তমানে সমগ্র দেশের দুগ্ধ শিল্পে খামারিদের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ এমরান, সহ সভাপতি আলী আজম রহমান শিবলী প্রমুখ।

মো. ইমরান হোসেন জানান, বর্তমানে দেশে বার্ষিক প্রায় ৯৯ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন করা হয় যা মোট চাহিদার প্রায় ৭০% বর্তমান পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ লাখ লিটার দুধ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে যার অর্থনৈতিক বাজার মূল্য প্রায় ৫৭ কোটি টাকা।

গ্রামের একজন কৃষক গরুর দুধ বিক্রি করে প্রতিদিনকার নিজের আহার এবং তার পোষা প্রানিটির জন্য খাবার কিনে আনে। গত দিন যাবত প্রান্তিক পর্যায়ের একজন খামারি দুধ বিক্রি করতে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। খামারিদের কোথাও দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা কেজিতে আবার কোথাও অনেকে বিক্রি করতে পারছেনা।

তিনি জানান, বাংলাদেশে দুগ্ধ প্রসেসর কোম্পানীগুলো দেশের মোট উতপাদনের মাত্র % দুধ প্রতিদিন সংগ্রহ করে থাকে যার পরিমান মাত্র ১৩ লাখ ৫৯ হাজার লিটার; বাকী কোটি ২৮ লাখ ৩৬ হাজার লিটার যা মোট উতপাদনের প্রায় ৮৪% দুধ খামারিরা বিক্রি করে বিভিন্ন মিষ্টি দোকানে বাসা বাড়িতে। বর্তমানে মিষ্টির দোকান সবই বন্ধ হয়ে যাবার কারনে এবং জনজীবনে নানা অস্থিরতার কারনে দুধ বিক্রি নিয়ে খামারিরা মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখীন।

সরকার দেশের দুগ্ধ প্রসেসর কোম্পানীগুলো আমাদের সহযোগিতায় না আসলে দেশের দুগ্ধ শিল্প ধংস হয়ে যাবার উপক্রম হবে । আমাদের দেশে টি বড় কোম্পানীর প্রতিদিন প্রায় সাড়ে লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করে গুড়া দুধ তৈরীর সক্ষমতা আছে। পাশাপাশি প্রায় আরো ১০ থেকে ১২ টি কোম্পানীর দুধ জাতীয় পন্য যেমনঃ ঘি, মাখন, ফ্লেভারড মিল্ক, আইসিক্রীম, ক্রীম তৈরী করার সক্ষমতা আছে সরকার প্রধান দেশের দুগ্ধ প্রসেসর কোম্পানী গুলো থেকে এই সহযোগিতা না পেলে অচিরেই গড়ে উঠা প্রায় ৫০% খামার বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি আরো জানান, করোনা ভাইরাস সমস্যায় আক্রান্ত পরবর্তী সময় এবং আসন্ন রোজার মাসে আমাদের দেশে দেখা যেতে পারে দুধ এবং দুধ জাতীয় পন্যের সংকট। তাই এই সময় দুধ মজুত করে রাখতে পারলেই দেশে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় হবে, তেমনি দেশের খামার শিল্পকে আমাদের এগিয়ে নেয়া যাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে লাখ দুগ্ধ খামার রয়েছে যেখানে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় কোটি ২০ লাখ মানুষ যাদের জীবন জীবিকা এই দুগ্ধ শিল্পের উপর নির্ভর করে। বর্তমানে সিন্ডিকেট করে পশুখাদ্যের অত্যাধিক উচ্চমূল্য, বিদ্যুত পানির বিল কৃষির আওতায় না এনে বানিজ্যিকিকরন সহ নানা সমস্যার কারনে দেশের দুগ্ধ খামার শিল্প ভিষনভাবে হুমকীর সম্মুক্ষীন।

This post has already been read 4308 times!

Check Also

বরিশালের বিনা উদ্ভাবিত আমনের জাত বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালের বিনা উদ্ভাবিত আমনের জাত পরিচিতি, বীজ উৎপাদন এবং সংরক্ষণ বিষয়ক …