এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: পোলট্রি, মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের উৎপাদন, বিপণন ও যোগান নিশ্চিতে এনিমেল হেলথ্ কোম্পানিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আহ্কাব) সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে পয়েন্ট আকারে প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। সংগঠনটির সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলাম ও মহাসচিব ডা.মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় যে,
বিশ্বব্যাপী সংক্রমিত কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশেও এ রোগের ক্রমশ: বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের আপামর জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সরকার ইতোমধ্যে আগামী ৪এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষনা করেছে এবং সর্বসাধারণকে ঘরে থাকার পরামর্শ প্রদান করেছেন। প্রশাসন ও আইন-শৃখলা বাহিনী সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে। কিন্তু সব কিছুর পরও প্রত্যেকটি মানুষেরই জীবন-জীবিকার প্রশ্নে প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হয়। মানুষের খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে সরকার নানান পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নের ভুলবুঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে।
আহ্কাব –এর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য নিম্নলিখিত ৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে-
১. মানুষের দৈনন্দিন খাবারে আমিষের প্রধান উৎস্য মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ। এসবের জোগান দেয়া হয় এদেশের প্রাণীজ খাত হতে। মানুষের মতোই গরু-ছাগল, হাস-মুরগীরও খাবার এর প্রয়োজন হয়। শত প্রতিকুলতার মাঝেও প্রাণীজকুলের খাবারের সরবরাহ ঠিক রাখা প্রয়োজন। একই সাথে দেশের পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য খাতের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানো প্রয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ প্রাণীজ খাবার, ঔষধ, উৎপাদিত ডিম, মুরগী, মাছ ও দুধ পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণে বাধা সৃষ্টি করছেন। এহেন ক্ষেত্রে দেশের পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য খামার সমূহ রক্ষা করা কঠিন হবে। ভোক্তা পর্যায়ে প্রাণীজ আমিষের জোগান বাধাগ্রস্থ হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। অতএব, বর্ণিত বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারী করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
২. দেশের আপদকালীন এ মুহুর্তে প্রাণীজ খাতের আমদানীকৃত পণ্য সামগ্রী ছাড়করণের বন্দরসমূহে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমদানীকৃত পণ্য সমূহের ল্যাব টেস্ট বাধ্যতামূলক রয়েছে কিন্তু ইতোমধ্যে সকল ল্যাব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অতএব, ল্যাব টেস্ট ব্যতীত পণ্য ছাড় করানো যাচ্ছেনা বিধায় প্রাণীজ খাতের পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। আপদকালীন সময় বিবেচনা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে শর্তসাপেক্ষ্যে আমদানীকৃত পণ্য সমূহ ছাড়করণের জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
৩. বাংলাদেশের প্রাণীজ খাতের বিনিয়োগে ব্যাংক সমূহের বিশাল ভুমিকা রয়েছে। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণজনীত কারণে বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশের প্রাণীজ খাতেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। কিন্তু ব্যাংক সমূহ ঋণের বিষয়ের কোন নির্দেশনা এখনো জারী করেনি। স্বাভাবিক নিয়মের তফসিলে প্রতিষ্ঠান সমুহের ঋণ পরিশোধ করা অনেকটাই দুরহ হয়ে পড়ছে। এহেন প্রেক্ষিতে দেশের প্রাণীজ খাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রয়োজন। একি সাথে ব্যাংক সমূহ আপদকালীন সময়ের জন্য ঋণ পরিশোধের সময়সীমা স্থগিত করাসহ সুদবিহীন ভাবে ঋণসমূহ পুনঃতফসিল করা প্রয়োজন। এতদবিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যথাযথ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।