কৃষিবিদ এজাজ মুনসুর: পোল্ট্রি সেক্টরের আলটিমেট প্রোডাক্ট ব্রয়লার ও ডিম হওয়াতে সাধারণ মানুষ ধারণাও করতে পারেননা এর পেছনে কি কি বিষয় জড়িয়ে আছে। আমি চাইলাম আর ব্রয়লার ও ডিম উৎপাদন হয়ে গেলো বিষয়টা কিন্তু এমন না।
পোলট্রি সেক্টর খালি চোখে শুধু ব্রয়লার আর ডিম দেখা গেলেও এর পেছনের ইতিহাস অনেকটা আইস বার্গের মতো। যা পানির উপরিতলে ভেসে থাকা বরফ দেখে আন্দাজ করা যায় না, এটি পানির নিচে কতটুকু ডুবে আছে। জানা যাবে তখনই যখন এটা সম্পর্কে যথেষ্ট ধারনা থাকবে।
ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের পিছনের ইতিহাস জানতে হলে সামনে আসবে জিপি ফার্ম, পিএস ফার্ম, কমার্শিয়াল লেয়ার ফার্ম, কমার্শিয়াল ব্রয়লার ফার্ম, হ্যাচারী, ফিড মিল, এনিমেল হেলথ ডিভিশন, পোল্ট্রি মেশিনারিজ ও ইকুইপমেন্ট নানা বিষয়।
সাধারণত সকল ফার্ম ও হ্যাচারিগুলোতে সর্বসাধারণের প্রবেশ সংরক্ষিত এবং মিডিয়ায় খুব বেশি আলোকপাত না হওয়ার কারণে ( বায়োসিকিউরিটি সংক্রান্ত সমস্যা থাকায়) খুব সহজে কেউ আন্দাজ করতে পারবে না আসলে এর পিছনে কি কি কাজ হচ্ছে বা কারা কারা কাজ করছে। উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে কয়েকহাজার ভেটেরিনারি ও এনিমেল হাজবেন্ড্রী গ্রাজুয়েট এই সেক্টরের প্রতিটি শাখার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত আছেন।
বাস্তবতা এটাই যে বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী সেক্টরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ও দুর্ভাগা একটি সেক্টর হলো “পোল্ট্রি সেক্টর “। এদেশে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য এনিমেল প্রোটিনের চাহিদা পূরন হচ্ছে মূলত এই সেক্টর থেকেই। অথচ এই সেক্টরটা যতোবার মানুষের সামনে আসে ততোবারই আসে কোনো না কোনো গুজবের কারণে। কখনো আসে মুরগীকে এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো নিয়ে, কখনো হয় ফিডে ট্যানারী বর্জ্য ব্যবহার নিয়ে, কখনো প্লাস্টিকের ডিম নিয়ে, কখনো হয় বিভ্রান্তি ও মানহীন গবেষণার কারণে।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে আপনি চাইলেই সহজে জেনে নিতে পারবেন আসলে প্রকৃত সত্য খবরগুলো কি। আসুন গুজব পরিহার করে এই দুঃসময়ে এই সেক্টর নিয়ে সকল প্রকার অপপ্রচার বন্ধ করি। নিজেরা সচেতন হই অন্য জনকে সচেতন করি। আর বেশি করে মুরগী ও ডিম খাই। নিজেদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে, এই সেক্টরের প্রতি সরকারের নীতিনির্ধারকদের এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে যথোপযুক্ত ভূমিকা রাখা জরুরি। এর পাশাপাশি এই সেক্টরকে নিয়ে যেকোনো প্রকার গুজবের বিরুদ্ধে শক্তিশালী নীতি প্রণয়ন এখন সময়ের দাবী।