কৃষিবিদ মহির উদ্দিন: ডিম পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর খাদ্য উপকরণ। ডিম ফুটে বের হয় একটা ফুটফুটে জীবন অর্থাৎ একটা জীবনের জন্য যে যে পুষ্টি দরকার তার সবই থাকে ডিমে।
ভিটামিন,উচ্চমানের প্রোটিন,ফ্যাট,খনিজ উপাদন কি নেই ডিমে? তাইতো ডিমকে বলা হয় পুষ্টিগোলক। একটা ডিমে থাকে ৭৭ ক্যালরি শক্তি,৬ গ্রাম প্রোটিন, ৫.৩ গ্রাম ফ্যাট,০.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, সব ধরনের ভিটামিন এবং মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল খনিজ উপাদান ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন ই আরো অনেক। তাছাড়া একটা ডিমে থাকে মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার –৯% ভিটামিন বি১২,১৫% ভিটামিন বি২,৬% ভিটামিন এ,৭% ভিটামিন বি৫, ২২% সেলেনিয়াম।
মানুষের মনে ডিমের কোলেস্টেরল নিয়ে একটা ভীতি কাজ করে। একটা বড় আকারের ডিমে ২১২ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা অন্যান্য খাবারের তুলনায় একটু বেশিই বটে। তবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় যে ডায়েটরি উৎসের কোলেস্টেরল রক্তে সামান্যই প্রভাব ফেলে। ডিম আসলে কোলেস্টেরল প্রোফাইলকে উন্নত করে। এইচডিএল (ভালো) কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং এলডিএল কণার আকার বাড়ায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
ডিমে ভরপুর থাকে এমন একটি ভিটামিন হলো কোলিন যা মস্তিষ্কের ডেভলপমেন্টের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান । মানবদেহের জন্য যতটুকু দরকার সে পরিমান কোলিন দেহ উৎপাদন করতে পারেনা তাই ডায়েটরী উৎসের অর্থাৎ খাদ্য থেকে সরবরাহ করা দরকার হয়। শুধু একটা ডিমে ১১৩ মিলিগ্রাম কোলিন থাকে। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক কোলিন প্রয়োজন ৫৫০ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী মহিলার জন্য ৪৫০ মিলিগ্রাম এবং বেষ্ট ফিডিং মহিলার জন্য ৪৫০ মিলিগ্রাম। এই কোলিন মস্তিষ্কের ডেভলপমেন্ট ছাড়া লিভারের রোগ,হৃদরোগ,স্নায়বিক রোগ প্রতিরোধ ও ভ্রণের বৃদ্ধির জন্য দরকার। তাই গর্ভবতী মহিলার জন্য ডিম খুবই উপকারী।
ডিম হলো আমাদের দেশে সবচেয়ে সহজলভ্য কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ পুষ্টিকর খাদ্য উপকরণ। তাই আসুন প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলি।
লেখক: উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, চাটমোহর, পাবনা।