নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষকের স্বার্থের কথা চিন্তা করে; তাদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য ধান-চাল কেনার ক্ষেত্রে ধানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এবারের মৌসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করা হবে। যা করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক হবে। সোমবার (১১ মে) সকাল ১১ টায় মন্ত্রীর মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে রংপুর বিভাগের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এমপি। ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা মোকাবেলা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারীভাবে ধান চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা পরবর্তী দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের প্রতিটি আবাদযোগ্য জমিতে ফসলের আবাদ করতে হবে; কোন জমিই অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, চলতি বোরো মওসুমে সারাদেশে বাম্পার ফলন হয়েছে। সঠিক সময়ে নতুন ফসল ঘরে তুলতে পারলে খাদ্যের সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশের মতো আমাদের দেশও একটা মহামারির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে; করোনা পরবর্তী খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পরস্পর পরস্পরের সাথে মিলেমিশে, ভালো আচরণ করার মাধ্যমে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিত্য-নতুন উদ্যোগ নিয়ে চলমান বোরো সংগ্রহ শতভাগ সফল করতে হবে। বর্তমান সময়ে করোনার সঙ্গে আমরা যেমন যুদ্ধ করছি; তেমনি করোনা পরবর্তী খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করার জন্যেও আমাদেরকে এখন থেকেই যুদ্ধ করতে হবে- বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরো বলেন, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ করোনা মোকাবেলা করে এই সংগ্রহ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। খাদ্যশস্য সংগ্রহে যাতে কোন অনিয়ম না হয় সেজন্য খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তীক্ষ দৃষ্টি রাখতে বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, লটারির মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকদের মধ্যে থেকে কৃষক নির্বাচন করা হবে। যদি কোন কৃষক তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগীদের নিকট বিক্রি করে তাহলে সেই কৃষকের কার্ড বাতিল করা হবে এবং সে সমস্ত মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে। কোন কৃষক যেন খাদ্যগুদামে ধান দিতে এসে ফেরত না যাই এবং কোনভাবেই যেন কৃষক হয়রানি না হয় সেজন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সতর্ক করেন মন্ত্রী। পাশাপাশি গুদামের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খামালের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং কৃষকের লটারি করার পর আগে থেকেই ওয়েটিং লিস্ট তৈরি করাসহ কিছু দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়া সংগ্রহ কার্যক্রমে সকলকে সহযোগিতা ও করোনা মোকাবেলায় সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলার আহবান জানান তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত থেকে খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, কোনোভাবেই পুরান চাল নেয়া যাবেনা; চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যে সংগ্রহকৃত চাল এবারের বোরো ধানের চাল; পাশাপাশি বস্তার গায়ে স্টেনসিল ব্যবহার করার নির্দেশ দেন তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, রংপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ও দিনাজপুর জেলার জেলা প্রশাসকগণ, রংপুর বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ বক্তব্য রাখেন।