নিজস্ব প্রতিবেদক: দূর্যোগকালীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদক, চাষি ও খামারিদের রক্ষায় সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার (২০ মে) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ এর প্রভাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের এ নির্দেশ প্রদান করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন ও শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, যুগ্মসচিব মোঃ তৌফিকুল আরিফ এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আবদুল জব্বার শিকদার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর, চট্টগ্রাম-এর পরিচালক মোঃ লতিফুর রহমান এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপপরিচালকগণ ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, ‘দূর্যোগের সময়ে মাছের এবং গবাদিপশুর খাবার সংকটের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নিরাপদ আশ্রয়ে গবাদিপশু ও হাঁসমুরগী সরিয়ে নেয়ার জন্য রক্ষণশীল মানুষদের বোঝাতে হবে। প্রয়োজনে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে। কি পরিমাণ মাছ ধরার ট্রলার বড় নদী বা সমুদ্রে আছে তার তথ্য কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে। উপকূলীয় প্রতিটি জেলার হালনাগাদ তথ্য তথা কি পরিমাণ গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে আনা হয়েছে, মাছের কতটি ঘের সংরক্ষণ করা হয়েছে সে রিপোর্ট দিতে হবে। এখনও যেসকল মৎস্য নৌযান সমুদ্রে বা বড় নদীতে রয়েছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।”
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘উৎপাদক, চাষি ও খামারীরা বিপন্ন হলে আমরা বিপন্ন হয়ে পড়বো। এ জন্য তাদের লালন ও পরিচর্যা গভীরভাবে করতে হবে। প্রতিটি জেলার কন্ট্রোল রুম মনিটর করতে হবে। গবাদিপশুর খাদ্য বিতরণ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সঠিকভাবে মনিটর করতে হবে, যাতে বরাদ্দকৃত খাদ্য প্রকৃত খামারীদের কাছে পৌঁছায়। আপনারা তৎপরতার সাথে কাজ করলে দূর্যোগে মৎস্যজীবী বা খামারিদের ক্ষতি অতীতের মতো হবে না। জরুরী পরিস্থিতিতে আপনাদেরকে আরো অধিক নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।”
গবাদিপশুকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া, মৎস্য ঘেরসমূহ জাল দিয়ে উঁচু করে ঘিরে রাখার বিষয়ে চাষিদের পরামর্শ প্রদান, গবাদিপশুর বরাদ্দকৃত খাদ্য প্রকৃত খামারীদের পৌঁছানো, সকল নৌযান নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরানো, মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, দূর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রণালয়কে অবহিতকরণ, দূর্যোগকালীন ও দূর্যোগ পরবর্তীতে রাজস্ব খাত বা প্রকল্প থেকে তাৎক্ষণিক ত্রাণ সহায়তা দেয়া, হ্যাচারীতে মাছের পোনা ও হাঁস-মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং উপদ্রুত এলাকায় টিকা প্রদান, চিকিৎসা, কৃত্রিম প্রজনন, পরামর্শ প্রদানসহ কারিগরি সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।