নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে প্রায় পৌনে দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বোরো ধান ৪৭,০০২ হেক্টর শতকরা ১০ ভাগ, ভূট্টা ৩,২৮৪ হেক্টর শতকরা ৫ ভাগ, পাট ৩৪,১৩৯ হেক্টর শতকরা ৫ ভাগ, পান ২,৩৩৩ হেক্টর শতকরা ১৫ ভাগ, সবজি ৪১,৯৬৭ হেক্টর শতকরা ২৫ ভাগ, চিনাবাদাম ১,৫৭৫ হেক্টর শতকরা ২০ ভাগ, তিল ১১,৫০২ হেক্টর ২০ ভাগ, আম ৭,৩৮৪ হেক্টর শতকরা ১০ ভাগ, লিচু ৪৭৩ হেক্টর শতকরা ৫ ভাগ, কলা ৬,৬০৪ হেক্টর শতকরা ১০ ভাগ, পেঁপেঁ ১,২৯৭ হেক্টর শতকরা ৫০ ভাগ, মরিচ ৩,৩০৬ হেক্টর শতকরা ৩০ ভাগ, সয়াবিন ৬৪০ হেক্টর শতকরা ৫০ ভাগ, মুগডাল ৭,৯৭৩ হেক্টর শতকরা ৫০ ভাগ এবং আউশ ৬,৫২৮ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার, ২১ মে) হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবন থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় আমফান এর ফলে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অনলাইনে (জুম প্ল্যাটফর্মে) মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি।
ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও অল্প কিছু কৃষিজ ফসলের বিশেষ করে ফলের মধ্যে আম, লিচু, কলা, সবজি, তিল এবং অল্প কিছু বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির চুড়ান্ত হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে ঘুর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মোট জমির পরিমাণ ১,৭৬,০০৭ হেক্টর। ইতোমধ্যে হাওড়ে শতভাগ, উপকূলীয় অঞ্চলে ১৭ জেলায় শতকরা ৯৬ ভাগসহ সারা দেশে গড়ে ইতোমধ্যে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কর্তন করা হয়েছে। ফলে,ক্ষতির পরিমাণ সামান্য যা আমাদের খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ মে ২০২০ তারিখে ঘূর্ণিঝড় আমফান আঘাত হানার পূর্বাভাস পাবার সাথে সাথেই কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ। ফলে ঘূর্ণিঝড় আমফানের ফলে কৃষিতে ব্যাপকভিত্তিক ক্ষতি সাধিত হয়নি।
তিনি বলেন, প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শাকসবজি ও মসলা চাষিদের তালিকা প্রণয়ন করে তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমন মৌসুমে বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করা হবে। এছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ফল ও পান চাষিদেরকে মাত্র ৪% সুদে কৃষি ঋণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ব্রিফিংকালে কৃষিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও সকলের সহযোগিতায় মহামারি করোনা এবং সুপার সাইক্লোন আম্পানের মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করে দেশের খাদ্য উৎপাদনের বর্তমান ধারা শুধু অব্যাহত রাখা নয়, তা আরও বৃদ্ধি করে ২০৩০ সালের ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ (এসডিজি) অর্জন করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।