ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বেড়িবাঁধ নির্মাণের ৯০০-১২০০ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প থেমে রয়েছে। অতিদ্রুত সেগুলো ছাড় করে উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া সংস্কার কাজসহ প্রকল্পের কাজে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুরে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ভাঙনকবলিত জায়গায় বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বাইরে থেকে মাটি এনে হলেও ২-৩ দিনের মধ্যে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। এর আগে, তিনি সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন।
বেড়িবাঁধ পরিদর্শনকালে সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য স ম জগলুল হায়দার, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল,পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা জোনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আবুল হোসেন, পাউবো সাতক্ষীরা-১ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের, পাউবো সাতক্ষীরা-২ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফউজ্জামান খাঁন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় নৌপথে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ভাঙ্গনকবলিত সদর বাজার, বারইখালী, কাঠালতলা, গাবতলাী, শরণখোলার গাবতলী এলাকার বিধ্বস্থ ২ কিলোমিটার বেরিবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জানান, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের জন্য প্রাথমিক ভাবে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এ বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে। এছাড়াও ক্ষডুগ্রস্থ বেড়িবাঁধ টেকসই করার জন্য ১শ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। নদী ভাঙ্গন এলাকায় অগ্রাধিকার ভিওিতে বেড়ীবাঁধ নির্মান করা হবে এবং বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে। বর্তমান সরকার কথা নয় কাজে বিশ্বাসী । সে জন্য ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ টেকসই করার জন্য আরও ১শ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড.আমিরুল আলম মিলন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নহিদ-উদ-জামান খাঁন, মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মনিরুল হক তালুকদার,উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন প্রমুখ। গত বুধবার ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে পানগুছি নদীর তীরবর্তী এসব এলাকার রাস্তাঘাট, ব্লক পায়লিং, নদীতে ধ্বসে যায়। যার ফলে ৫ শতাধীক কাঁচা বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে উপকুলীয় অঞ্চলের কতটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা সরেজমিনে দেখতে প্রতিমন্ত্রীর এ সফর। দুই দিনের এ সফরে প্রতিমন্ত্রী উপকুলীয় জেলা পিরোজপুর,বাগেরহাট,খুলনা ও সাতক্ষীরার বেড়িবাঁধ ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে আজ সাতক্ষীরা হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
উল্লেখ,দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড়ে আম্পানের আঘাতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে একের পর এক ভেঙেছে উপকূলীয় বেডড়িবাঁধ। ঝড়ে লন্ডভন্ড হযয়েছে খুলনা,বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার কয়েকটি উপজেলা। এতে পানিতে ভাসছে উপকূলের শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও খুলনার কয়রা,পাইকগাছা,বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ,শরনখোলাসহ কয়েকটি উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। দিনে দুইবার ডুবছে আর দুইবার জাগছে উপকূলবাসি। ২০ মে, বুধবার কয়েক ঘণ্টার তান্ডবে উপকূলীয় জেলা খুলনা,বাগেরহাট সাতক্ষীরাকে তছনছ করে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। যত দিন এগোচ্ছে, পরিস্থিতি ততই ভয়াবহতা হচ্ছে। শুধুমাত্র গাছপালা ভেঙে পড়া এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যাওয়ার মধ্যেই ক্ষয়ক্ষতি সীমাবদ্ধ নেই। ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাতের দিন প্রাথমিকভাবে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা একেবারেই বিকল হয়ে গিয়েছিল। সেসব পরিষেবা যত স্বাভাবিক হচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির সামগ্রিক চিত্রটাও ধীরে ধীরে সামনে আসছে।
সুন্দরবনের বাইরে সাতক্ষীরাসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ভেসে গেছে শতশত মাছেরঘের ও কাকড়ার খামার। ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। সুন্দরবনের কোলে শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী ও কাশিমাড়ি ইউনিয়ন, আশাশুনির সদর, প্রতাপনগর, আনুলিয়া ও প্রতাপনগর ইউনিয়ন এবং খুলনার কয়রা উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। কয়েক লক্ষ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেখানে। পানির তোড়ে ভেসে গিয়েছে বাড়িঘর। পানি যেখানে উঠতে পারেনি, সেখানে আবার ঝড়ের দাপটে উড়ে গিয়েছে অসংখ্য কাঁচাবাড়ির চাল। দরমার দেওয়াল সমেত খড়ের চাল ভেঙে পড়ার ছবিও সামনে এসেছে। এরআগে ২০০৯ সালে আইলার সময়ও একই অবস্থা দেখা দিয়ে ছিল এসব এলাকায়। সেইসময় রিং বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়।কিন্তু বেড়িবাঁধ নির্মাণের সেই পরিকল্পনা লাল ফিতায় আটকে থাকে প্রায় ১১টি বছর। এ অভিযোগ স্থানীয়দের। এঁদের মধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা তাদের মাছের খামার রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাঁধা হয়ে দাঁড়িছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।চরম খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে উপকূলজুড়ে। সেখানে কোথাও কোথাও একবুক পর্যন্ত পানি জমেছে। বহু বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর আটদিন কেটে গেলেও, এখনও ভাঙা বাঁধের মেরামত হয়নি। সেখানে প্রচুর গাছপালা ভেঙে পয়েছে। পানির তোড়ে ভেসে গিয়েছে বহু বাড়িঘর ও দোকানপাট। তার মধ্যেই ত্রিপল খাটিয়ে কোনও রকমে মাথা গুঁজে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।এই সমস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে ইতোমধ্যেই সরকারের তরফে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ত্রাণ কম বলে অভিযোগ আসছে অনেক এলাকা থেকেই। ত্রাণ কাজে নেমেছে অনেক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সংগঠন।এদিকে দুর্গত এলাকায় সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় এখনো পৌছেনি ত্রাণ ,ভেঙে পড়ছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন গোটা উপকূল। ফলে জ্বলছে বিদ্যুতের আলো, ঘুরছে না পাখা। নলকূপগুলো রয়েছে পানির নিচে। রাস্তাগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ার-ভাটা। রাস্তাগুলো ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। ঘূণিঝর্ড় আম্পানের সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ভাঙন কবলিত কয়রার বেড়িবাঁধ স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করলেও জোয়ারের আবার ভেঙে পড়ে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সাতক্ষীরার উপকূলের অনেক ইউনিয়নে মানুষের বাড়ি ঘরে মধ্যে এখনও জোয়ার-ভাটা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে না পেয়ে অধিকাংশ এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে নেমে পড়েছে। কিন্তু নদীতে প্রবল জোয়ার থাকায় বাঁধ টেকানো যাচ্ছে না। এক পাশের বাঁধ দিয়ে বাড়ি ফিরতেই আরেক পাশে ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের বলেন, গাবুরা এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে চেয়েছেন, তাদের আমরা বস্তা দিয়ে সাহায্য করেছি। তারা যেটা চাচ্ছে তখন সেটা সরবরাহ করছি। আমরা তো কাজ করি না। ঠিকাদারা কাজ করে কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগ করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তারপরও এলাকায় পানি বন্ধ করতে তাদের সাহায্য করছি।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ঈদের দিনেও কাজ করেছি। সেনাবাহিনী কাজ করবে। সে কারণে রিপোর্ট করতে হচ্ছে। যারা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছে, তাদের সকল প্রকার বস্তা ও বাঁশ দিয়ে আমরা সাহায্য করেছি।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার আঘাতে কয়রার পাউবোর বেড়িবাঁধের ২৭টি পয়েন্ট জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে লোনা পানিতে তলিয়ে যায়। ২০ মে আম্পানের আঘাতে কয়রার বেড়িবাঁধের ২৪ পয়েন্ট ভেঙে আবারও লোনা পানিতে সয়লাব হয়।
আইলায় আঘাতের পর দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা, খাসিটানা, জোড়শিং, মাটিয়াভাঙা উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরি, গাববুনিয়া, গাজিপাড়া, কাটকাটা, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৬নং কয়রা, ৪নং কয়রার পুরাতন লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকা, ঘাটাখালি, হরিণখোলা, মহারাজপুর ইউনিয়নের উত্তর মঠবাড়ি, দশালিয়া, লোকা, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কালিবাড়ি, নয়ানি, শেখেরটেক এলাকার বেড়িবাঁধ অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। গত ১১ বছর ধরে কয়রার মানুষ এসব বেড়িবাঁধ সংস্কার করার আন্দোলন করে। আইলার ৩ বছর পর ২০১২ সালে পবনা বাঁধ, হারেজখালি, পদ্মপুকুর, শিকারিবাড়ি, পাথরখালি বাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু তারপর থেকে কয়রার ৬টি ইউনিয়নের কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে পর্যাপ্ত মাটি পড়েনি।
পাউবো সূত্র অনুযায়ী, আইলার পর খুলনা,বাগেরহাট,সাতক্ষীরা,বরগুনা,পিরোজপুর,পটুয়াখালী জেলার বেড়িবাঁধ রক্ষায় ‘উপকূলীয় বাঁধ রক্ষা প্রকল্প ফেজ-১ (সিইআইপি প্রকল্প)এর আওতায় খুলনাসহ উপকূলীয় ৬২৫ কিলোমিটার বাঁধ পুনঃনির্মাণে বৃহৎ প্রকল্প ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়), ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনার দাকোপে ৩১ নং পোল্ডার এবং বটিয়াঘাটায় ৩০ ও ৩৪/২. খুলনা জেলার ভূতিয়ার বিল এবং বর্ণাল সলিমপুর কোলাবাসুখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন প্রকল্প (২য় পর্যায়),৪৬ কোটি টাকা ব্যায়ে সালতা,ভদ্রা খনন প্রকল্প, খুলনা জেলার রূপসা এবং বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী এবং বাগেরহাট সদরের কিছু অংশ নিয়ে প্রায় ২৫৬ কোটি টাকায় ববাগেরহাট জেলার পোল্ডার নং-৩৬/১ এর পুনর্বাসন প্রকল্প (১ম সংশোধিত),প্রায় সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ব্যায়ে ইন্দো-বাংলাদেশ নৌরুট সচল রাখার স্বার্থে মংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেলের উচ্চহারে পলি পতন হ্রাস করা এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও মৎস উৎপাদন রক্ষা করার লক্ষে বাগেরহাট জেলায় ৮৩টি নদী/খাল পুনঃখনন এবং মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের নব্যতা বৃদ্ধি প্রকল্প । এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। বেড়িবাঁধ পুনঃসংস্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের পরও এ অঞ্চলের বেড়িবাঁধ নিয়ে মানুষের আতঙ্ক কমেনি। ২০১৯ সালের ৪ মে ঘূর্ণিঝড় ফনী ও ১১ নভেম্বর বুলবুলের সময় উপকূলীয় কয়রা ও দাকোপে বড় আতঙ্ক ছিল বেড়িবাঁধ। আর গত ২০ মে আম্পানের সময় এ আতঙ্ক প্রবল হয়ে ওঠে। আম্পানের আঘাতে উপকুলীয় ঝুকিপুর্ণ বাঁধ ধ্বসে যায়। সমগ্র উপকুল এখন লোনা পানির বদ্ধ এলাকায় পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণ বেদকাশীর বাসিন্দা আবু সাঈদ খান বলেন, আইলায় বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর মানুষ বাঁধের ওপর আশ্রয় নিতে পেরেছিলেন। কিন্তু আম্পানে ঘর বাড়ি, বাঁধ সবই। তাই মানুষের ন্যূনতম আশ্রয় নেওয়ার অবস্থাও নেই। বাধ্য হয়ে এখন মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে আগে বাঁধ নির্মাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাদা জলে নেমে পড়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাঁধ নির্মাণে প্রতি বছরই অর্থ বরাদ্দ হয়। কিন্তু এ অর্থ কোথায় কীভাবে ব্যয় হয় তা মনিটরিং করার কেউ ছিল না। ফলে বাঁধ নির্মাণের নামে কথিত ‘জরুরি কাজ’ অজুহাতে বাঁধের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট হয়। এখন যার খেসারত দিচ্ছে উপকুলবাসীর।