বুধবার , ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪

কৃষি বিজ্ঞানী ড. মাহবুবের যত সাফল্য

কৃষি বিজ্ঞানী ড. মো. মাহবুবুর রহমান।

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহবুবুর রহমান একাধারে কৃষিগবেষক, কীটতত্ত্ববিদ  এবং নিরাপদ ফসল উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবক।

ছাত্রজীবনে তিনি ছিলেন সেরাদের অন্যতম। স্বপ্ন দেখতেন একজন কৃষিগবেষক হয়ে দেশের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত হওয়ার। আর তা সত্যি হয় ২০০৭ সালে বিএসসি-ইন-অ্যাগ্রিকালচারে (সম্মান) উত্তীর্ণ হওয়ার মধ্য দিয়ে। দু’বছর পর কীটতত্ত্ব বিষয়ে এমএসসিতে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।উভয় ডিগ্রিই অর্জন হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে। এরপর ২০১১ সালে চাকরিপ্রাপ্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বরিশাল কেন্দ্রে যোগদান করেন।

কর্মজীবনের শুরু থেকেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপদ শাকসবজি, ফল, পান ও ডাল ফসলের পোকামাকড় দমনের ওপর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। যার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে বিশ্বের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ দক্ষিণ কোরিয়ার আন্দং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষাগ্রহণের আমন্ত্রণ পান । সে দেশের প্রেস্টিজিয়াস ব্রেন কোরিয়া (বিকে ২১ প্লাস) এর বৃত্তি নিয়ে গবেষণা সম্পূর্ণ করেন। এর ফলে তিনি ২০১৬ সালে অ্যাপ্ল্যাইড এন্টোমোলজি বিষয়ে  পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তাঁর গবেষণার ৬ টি প্রবন্ধ পৃথিবীর বিখ্যাত ৫টি আন্তর্জাতিক এসসিআই জার্নালে প্রকাশিত হয়। এগুলো গুণগত হওয়ায় তিনি এক্সিলেন্ট স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। শুধু কী তাই! গবেষণা চলাকালিন সময়ে এসব প্রবন্ধ এন্টোমোলজিকাল স্যোসাইটি অব আমেরিকার কনফারেন্সে উপস্থাপিত হয়। সেখানেও তিনি স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এছাড়াও ২০১৬ সালে কোরিয়ান সোসাইটি অব অ্যাপ্ল্যাইড এন্টোমোলজির আমন্ত্রণে তিনি বেস্ট স্টুডেন্ট প্রেজেন্টেশন অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন।

তিনি ‘বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষকৃত ফল, পান, সুপারি ও ডাল ফসলের পোকামাকড় সনাক্তকরণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তার’ কর্মসূচির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ‘ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ’ প্রকল্পের মনিটরিং ও পরিবীক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করছেন।

২০১৯ সালে তিনি নেদারল্যান্ডে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ভাসমান কৃষির পোকামাকড়ের উন্নত দমন ব্যবস্থাপনার ওপর এক শিক্ষা সফরে অংশগ্রহণ করেন। সম্প্রতি তিনি একটি উচ্চফলনশীল কচুর জাত, দক্ষিণাঞ্চলে চাষ উপযোগী মুগের ফুলের পোকা দমন, আকর্ষণ ও মেরে ফেলা পদ্ধতির মাধ্যমে কুমড়াজাতীয় মাছি পোকা দমন প্রযুক্তি ওপর গবেষণা করছেন।

তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধর্মচাকী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম মৃত মুনতাজ আলী মাস্টার।

This post has already been read 5927 times!

Check Also

ফসলের উৎপাদন বাড়তে বেশি করে গবেষণার নির্দেশ দিয়ে কৃষিমন্ত্রীর

গাজীপুর সংবাদদাতা: ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বেশি করে গবেষণা করতে কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের নির্দেশ …