ড. মো. মনিরুল ইসলাম : আলু এমন একটি সবজি যে কোন তরকারিতেই ব্যবহার করা যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা আলুর খোসা ফেলে দেই। কিন্তু অনেকের ধারনা নেই যে আলুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আর পটাসিয়াম। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন বি, সি এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। তাই সর্বোচ্চ পুষ্টি পেতে আলু খেতে হবে খোসাসহ।
প্রথম উপকারিতা : আলুর খোসায় প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম এবং মিনারেল রয়েছে। যা শরীরের রাসায়ানিক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। পটাশিয়াম আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে সচল রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। এক একটি আলুর খোসা থেকে আমরা ৬০০ গ্রাম পটাশিয়াম পেতে পারি। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
দ্বিতীয় উপকারিতা: মানুষের প্রতিদিন অত্যন্ত পক্ষে ১৬ মিলিগ্রাম করে নিয়াসিন শরীরের জন্য প্রয়োজন।শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় এই নিয়াসিন সহজেই পাওয়া যেতে পারে আলুর খোসা থেকে। নিয়াসিন শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
তৃতীয় উপকারিতা: আলু থেকে আমরা প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং কার্বোহাইড্রেট পাই। তেমনি আলুর খোসাতেও এসব উপাদান থাকে। তাই আলুর খোসা না ছাড়িয়ে খাওয়া হয়, তাহলে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং কার্বোহাইড্রেট বেশি পরিমানে পাওয়া যাবে। এতে শরীর আরও শক্তিশালী ও রোগ প্রতিরোধী হয়ে উঠবে।
চতুর্থ উপকারিতা : আয়রন হল শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আয়রণ দেহের রক্ত কণিকার স্বাভাবিক কার্যপ্রণালীকে সক্রিয় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক দিন ৩-৫টি খোসা সহ আলু খেলে শরীরে ৪ মিলিগ্রাম লোহা বা আয়রন যোগান দিবে।
পঞ্চম উপকারিতা: যাদের হজমশক্তি দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে আলুর খোসা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। কারণ, আলুর খোসায় প্রচুর পরিমানে ফাইবার আছে। ফাইবার শরীরের হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। আলুর খোসা গুরুপাক খাবারও সহজে হজম করতে সাহায্য করে।
ষষ্ঠ উপকারিতা: আলুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার ফলে হজমশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরের অতিরিক্ত গ্লুকোজ শুষে নেয়। এতে আলুর খোসা শরীরের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত করতে সাহায্য করে । যদিও ডায়াবেটিস রোগীদের আলু খেতে নিষেধ; তবে আলু যদি খোসা সমেত সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে রান্না করা হয় বা খাওয়া হয় তাতে খুব একটা ক্ষতি হয় না।
লেখক: পরিচালক (পুষ্টি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল।