আশিষ তরফদার (পাবনা) : বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিনা), ঈশ্বরদী কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত সমূহের পরিচিতি, চাষাবাদ পদ্ধতি, বীজ উৎপাদন ও প্রদর্শনী স্থাপন শীর্ষক ৩ দিনব্যাপী (২০-২২ জুন) কৃষক প্রশিক্ষণ বিনা উপকেন্দ্রের প্রশিক্ষণ হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণে পাবনা ও নাটোর জেলার ৭৫ জন আমন চাষী অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ঈশ্বরদী আয়োজনে অনুষ্ঠিত উক্ত কৃষক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আজাহার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা কৃষি তথ্য সার্ভিস,আঞ্চলিক অফিসের আঞ্চলিক কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সরকার ও ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুল লতিফ। এতে সভাপতিত্ব করেন বিনা উপকেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং ইনচার্জ কৃষিবিদ সুশান চৌহান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সুধীজনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্যে ঈশ্বরদীস্থ উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খান জাহান আলী বলেন, বিনা ধান -২২ জাতটির বৈশিষ্ট্য হলো ধানটি উচ্চ ফলনশীল, স্বল্প মেয়াদি, আলোক অসংবেদনশীল, লম্বা, চিকন দানা বিশিষ্ট্, ধান গাছটি পরিপক্কতা অবস্থায়ও ডগাপাতা গাড় সবুজ ও গাছটি শক্ত খাড়া থাকে হেলে পড়ে না। আমন মৌসুমে এ জাতের ধান আবাদ করা সম্ভব বলে তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
প্রধান অতিথি কৃষিবিদ মো. আজাহার আলী বলেন, বিনা’র উদ্ভাবিত জাতটির জীবন কাল ১১২-১১৫ দিন হওয়ায় কৃষকদের জন্য আমন মৌসুমে এর চাষ খুবই উপযোগী। তিনি আরো বলেন, বৈশিষ্টগত কারণে অন্যান্য ধানের চাইতে এর প্রতি শীষে ২০০-২৫০টি দানা থাকে এবং ফলন আশাব্যঞ্জক। কৃষকের জন্য এ জাতের ধান চাষ খুবই লাভজনক হওয়ায় উপস্থিত কৃষকদের এই জাতের আবাদ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তাগণ বিনা ধান-২২ জাতটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট সম্পর্কে বলেন, ধান চাষে জীবনকাল স্বল্প মেয়াদি হওয়ায় জমিতে ২০-২৫দিন বয়সের চারা রোপন করা যায়, সেচের খুব একটা প্রয়োজন হয় না, তবে প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে। সঠিক ভাবে যত্ন পরিচর্যা নিলে গড় ফলন হেক্টরে ৬.১-৬.৫ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিনা ধান-২২ জাতটির আবাদ বাড়ানোর জন্য বক্তারা চাষীদের অনুরোধ জানান।
তিনদিন ব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণে বিনা উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত সমূহের পরিচিতি, চাষাবাদ পদ্ধতি , বীজ উৎপাদন ও প্রদর্শনী স্থাপন কৌশল, প্রধান প্রধান রোগ ও পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা এবং বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ের উপর হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণে বিনা উপকেন্দ্রের কর্মকর্তাবৃন্দ প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
সভাপতি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিনা -২২ ধানের জাতটি অন্যান্য আমন ধানের চাইতে খুবই যুগোপযোগিও লাভজনক ফলে জাতটির আবাদ বাড়াতে হবে। তিনি প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের জন্য উপস্থিত কৃষকদের অনুরোধ জানান।