মো.জুলফিকার আলী (পাবনা) : সুস্থ ও সবলভাবে বেঁচে থাকতে পুষ্টিকর খাবার খেতেই হবে। একজন পূর্ণ বয়স্ক লোকের দৈনিক ২১৩ গ্রাম সবজি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা গড়ে মাত্র ৭০ গ্রাম শাক-সবজি গ্রহণ করি। যেহেতু সব বসতবাড়ির আঙ্গিনায় কম বেশি খোলা জায়গা থাকে। তাই সেসব স্থানে শাকসবজি চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বাড়তি আয়েরও ব্যবস্থা করা যায়। তাই আপনারা সঠিকভাবে তা রোপন ও পরিচর্যা করে সবজি বাগানকে বাস্তবায়ন করে তুলবেন।
সোমবার (২২ জুন) কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কালিকাপুর গ্রামে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের খরিফ-১/২০২০-২১ মৌসুমে ০১ শতাংশ জমিতে পারিবারিক কৃষির আওতায় সবজি পুষ্টি বাগান স্থাপনের লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার,বেড়া, পরিচর্যা বাবদ অর্থ এবং অন্যান্য উপকরণ বিতরণ উব্দোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিংকন বিশ্বাস এসব কথা বলেন। উপজেলার মোট ৩শ’ কৃষক কৃষাণীর মাঝে নগদ অর্থ বীজ ও উপকরণ বিতরণ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসজনিত মহামারিতে দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় না হয় সে লক্ষে সরকার কৃষিতে সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্নভাবে কৃষকদেরকে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আজকের এ কৃষি সবজি বাগান স্থাপনের অর্থ বীজ ও উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, পারিবারিক কৃষির আওতায় সবজির পুষ্টি বাগান স্থাপন কার্যক্রম এ মিরপুর উপজেলাতে ৪১৬টি পরিবার কে বীজ, সাইনবোর্ড ও মোবাইল ব্যাংক এর মাধ্যমে রাসায়নিক সার, জৈব সার এবং সবজি বাগান ঘেরার জন্য ১৯৩৫ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। বিতরণকৃত অর্থে বসতবাড়ির রোদযুক্ত উঁচু স্থানে ৬ মিটার লম্বা ও ৬ মিটার চওড়া জমি নির্বাচন করে পাঁচটি বেড তৈরি করতে হবে। যেখানে প্রতিটি বেডের প্রস্থ হবে ৮০ সে.মিটার এবং দুই বেডের মাঝখানে নালা থাকবে ২৫ সে. মিটার। সময়মতো সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা এবং রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধে আইপিএম বা সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দমন করতে হবে। এ ধরণের একটি পারিবারিক পুষ্টি বাগান পরিবারের সব সদস্যদের অংশগ্রহণে সহজেই গড়ে তোলা সম্ভব। পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি সবজি বিক্রি করে নগদ টাকাও পাওয়া যায়। তাই প্রত্যেকটি বসতবাড়িতেই এ ধরণের বাগান তৈরি করলে আমরা সবাই লাভবান হতে পারব বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
পরে কালিকাপুর মডেলে সবজি বাগান স্থাপনে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ। প্রশিক্ষণ শেষে প্রধান অতিথি চাষীদের মধ্যে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ৪১৬ টি পরিবার কে বীজ, সাইনবোর্ড ও মোবাইল ব্যাংক এর মাধ্যমে রাসয়নিক সার, জৈব সার এবং সবজি বাগান ঘেরার জন্য ১৯৩৫ টাকা বিতরণ করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ সাবিহা সুলতানা এর সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বনাথ পাল, সুকেশ পাল, তোফাজ্জল হোসেন, আব্দুল আলীম, মঈনুল ইসলাম, মোছাঃ শাহানা সুলতানা প্রমুখ।