বুধবার , ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪

লবণ পানিতে ভাসছে খুলনার কয়রা

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে ভেঙে যাওয়া খুলনার কয়রা উপজেলার (পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩-১৪/১ ও ১৩-১৪/২ পোল্ডার) ঘাটাখালি, হরিণখোলা, দশালিয়া, লোকা, রত্না, গাজীপাড়া, হাজতখালি, গোলখালি, আংটিহারা, মেদেরচর, জোড়শিং বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মানের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্থ এ সকল বেড়িবাঁধ নতুনভাবে নির্মান করা না হলে লোনা পানিতে ৪টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়বে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মে আম্ফানের জলোচ্ছাসের কারনে কয়রার ২০ কিলোমিটারের বেশি ওয়াপদা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ১১টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে কয়রা সদর, মহারাজপুর, উত্তর বেদকাশি ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম লোনা পানিতে প্লাবিত হয়। ফলে মানুষের বসতবাড়ি, ফসলি জমি, গাছ পালা, গবাদি পশু ও হাঁস মুরগীর ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এদিকে, স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ দু’দফা চেষ্টা করার পর কয়রা সদরের ঘাটাখালি, ২নং কয়রা, মহারাজপুরের লোকা, দশালিয়া, উত্তর বেদকাশির, রত্না, গাজীপাড়ার একাংশ, দক্ষিণ বেদকাশির আংটিহারা, গোলখালি, জোড়শিং ও মেদের চরে রিংবাঁধ তৈরী করে লোনা পানি ওঠা নামা বন্ধ করতে সক্ষম হয়। তবে, এলাকাবাসীর আশংকা দুর্বল রিংবাঁধগুলো মাটি দিয়ে চওড়া ও উঁচু করতে না পারলে আষাঢ়-শ্রাবণের বড় জোয়ারের পানির চাপে আবারো রিংবাঁধ ভেঙে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় ঘাটাখালি গ্রামের বাসিন্দা শেখ আফতাব উদ্দিন জানান, সদ্য নির্মিত রিং বাঁধে পর্যাপ্ত মাটি ফেলা দরকার, তা নাহলে জোয়ারের পানিতে যে কোন মুহুর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।২নং কয়রা গ্রামের শাহাবাজ হোসেন বলেন, রিংবাঁধ রক্ষা করতে হলে প্রতিদিন ৫/৬শ’ শ্রমিক লাগিয়ে মাটির কাজ করা দরকার। তবে, এলাবাবাসী জরুরী ভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের জোর দাবী করেন। কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহা. হুমায়ুন কবির বলেন, ২নং কয়রা ও ঘাটাখালি রিং বাঁধ রক্ষায় শ্রমিকদের চাল দিয়ে কাজ করানো অব্যাহত রয়েছে।

পাউবোর আমাদী উপ-বিভাগীয় অফিসের সেকশন অফিসার মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, মূল বেড়িবাঁধ নির্মান করবে সেনাবাহিনী। আর টেকসই রিংবাঁধ নির্মান করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এজন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে কাজ করা যাবে। তবে এখন পাউবোর পক্ষ থেকে রিংবাঁধে বস্তা, দড়ি, পেরেক, বাঁশ সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

This post has already been read 2867 times!

Check Also

পরিবেশ সুরক্ষা ও পানি সাশ্রয়ে এডব্লিউডি সেচ পদ্ধতি

ড. এম আব্দুল মোমিন: ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য। আউশ, আমন  বোরো মৌসুমে আমাদের দেশে ধান …