মো. দেলোয়ার হোসেন টিপি (রাজশাহী) : রাজশাহীর মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় অত্র জেলায় ফলটি খুব সম্ভাবনাময়। তাই গত কয়েক বছর যাবৎ রাজশাহীতে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল মাল্টা উৎপাদন অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাজশাহী জেলার আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ফলটির চাষ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পতিত জমি, বাড়ির আঙ্গিনায় কম খরচে এবং বানিজ্যিকভাবে জমি তৈরী করে সহজেই চাষ করার মাধ্যমে বেশ লাভবার হওয়া যাচ্ছে। তাই গত কয়েক বছর থেকে রাজশাহীসহ পাশর্^বতী জেলাতেও বাণিজ্যিকভাবে চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভাগ্য বদলে কর্মসংস্থান হয়েছে বেকার যুবকদের। সবচেয়ে বেশী চাষ হচ্ছে বারি মাল্টা-১। মিষ্টি জাতের দেশী বারি মাল্টা রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলাসহ নগরীর বাজারগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে। রোগবালাই ও ঝরেপড়া কম হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাহিদাও বেড়েছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে, রাজশাহীতে মাল্টার প্রথম চাষাবাদ শুরু হয়েছে ২০১৫ সালে। আর বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে। গত বছর ২০১৯ সালে রাজশাহীতে চাষ হয়েছিল ১১৮ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ১৬০ মেট্রিক টন। এ বছর মোট চাষ হয়েছে ১৪৮ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছে ১৯০ মেট্রিক টন। প্রতি হেক্টরে মাল্টার ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টন। রাজশাহী জেলাতে মাল্টা বাগান রয়েছে অনুমানিক ৩৩০ টি। বাগানেই মাল্টা পাইকারী বিক্রয় হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: শামছুল হক বলেন, রাজশাহীর অনেক বেকার যুবক এখন মাল্টা চাষে ঝুকে পড়েছেন। মাল্টার বাজার মুল্যও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় জেলায় আবাদ দিনে দিনে বাড়ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।
তিনি আরো বলেন, মাল্টা চাষে জেলায় এখন কৃষকদের ২ কোটি টাকা আয় হয়ে থাকে। জেলায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ চাষ থেকে শুরু করে মাল্টার বিভিন্ন ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। সকল বাগানে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে চারাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করে সহযোগীতা করা হয়ে থাকে। আগামীতে মাল্টা চাষে আরো কৃষক উদ্ধুদ্ধ হওয়ার মধ্যদিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং বিদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। আবাদ আরো বৃদ্ধিও মাধ্যমে বিদেশে মাল্টা রপ্তানি করার সম্ভাবনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।