নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি কৃষিগবেষণার ১৫টি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান সম্মিলিত আনুষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো, আব্দুর রাজ্জাক, এমপি বলেছেন, পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশগুলোকে এখন থেকে নতুন করে গবেষণা নিয়ে ভাবতে হবে। আর গবেষণা নিয়ে এই নতুন চিন্তাধারায় আমাদের কয়েক ধাপ এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করতে পারে ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ এর মতো বৈশ্বিক উদ্যোগ।
মন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) আয়োজিত ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ বিষয়ে অনলাইন ব্রিফিং সেশনে এই মন্তব্য করেন। এতে ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং কৃষিসচিব মো. নাসিরুজ্জামানকে অবহিত করেন ইরির মহাপরিচালক ড. ম্যাথিউ মোরেল।
ওয়ান সিজিআইএআর’র ‘২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্বগড়ার’ অঙ্গীকারকে স্বাগত জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো, আব্দুর রাজ্জাক, এমপি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার আগামীতে এই উদ্যোগকে সর্বোতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে। এছাড়াও, বাংলাদেশের কৃষি তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইরিসহ অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো আরো জোরালো কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে আসবে বলেও কৃষিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
কনসাল্টেটিভ গ্রুপ ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচার রিসার্চ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো সিজিআইএআর। কৃষি নিয়ে গবেষণা করে এমন ১৫টি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত একটি অনানুষ্ঠানিক প্ল্যাটফরম ছিলো সিজিআইএআর। সম্প্রতি এই ১৫টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এক হয়ে এই প্ল্যাটফরমটিকে একটি আনুষ্ঠানিক রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই আনুষ্ঠানিক রূপের নামই ‘ওয়ান সিজিআইএআর’। এর অংশ হিসেবে এই বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষিবিষয়ক অভিন্ন ইস্যুতে একযোগে কাজ করবে। এতে করে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার যেমন নিশ্চিত করা যাবে তেমনি পারষ্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রমের লক্ষ্য অর্জনও সহজ হবে বলে মনে করছেন এর উদ্যোক্তারা।
ইরি ছাড়াও, এই ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ উদ্যোগের সাথে রয়েছে IFPRI, World Fish, CIMMYT, Africa Rice, ICRISAT, International Livestock Research Institute (ILRI), International Water Management Institute (IWMI), World Agro Forestry (ICRAF), The Alliance of Bioversity International and the International Center for Tropical Agriculture (CIAT), International Potato Centre (CIP), International Institute of Tropical Agriculture (IITA), Centre for International Forestry Research, International Center for Agricultural Research in the Dry Areas (ICARDA) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলো আগামীতে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, দারিদ্র্যবিমোচন ও জীবনমান উন্নয়ন, লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য প্রভৃতি বিষয়ে একযোগে কাজ করবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছে ।
কৃষিসচিব মো, নাসিরুজ্জামান বলেন, ইরিসহ ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ প্ল্যাটফরমের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নতুন এই ‘ওয়ান সিজিআইএআর’ প্ল্যাটফরম গবেষণার জন্য যেসব বিষয়কে প্রাধান্য দেবে, তার সাথে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনার অনেক মিল আছে। এ কারণে ভবিষ্যতে নতুন নতুন আরো অনেক অংশীদারিত্বের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ইরির মহাপরিচালক ড. ম্যাথিউ মোরেল বলেন, এই উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশে ইরি-ব্রির চলমান গবেষণা কার্যক্রমে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বরং এটি ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী ও জোরালো হবে।
অনলাইন ব্রিফিংয়ে ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, ইরির গ্লোবাল ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. জিম গডফ্রে, ইরির দক্ষিণ এশিয়া প্রতিনিধি ড. নাফিস মিয়া এবং ইরির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. হোমনাথ ভান্ডারি, বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এম বখতিয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।