আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশে চর্বিযুক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা না থাকায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। খাবারে উচ্চমাত্রায় চর্বি জাতীয় পদার্থ ট্রান্স-ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) ব্যবহারের কারণে যে ১৫টি দেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া রয়েছে আরো ১১টি দেশ। দেশগুলোতে এই ধরনের পদার্থ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে এখনো নীতিমালা না করায় উদ্বেগ জানিয়েছে সংস্থাটি।
ডব্লিউএইচ বলছে, পৃথিবীর মোট ৫৮টি দেশ এখন পর্যন্ত আইন করেছে, যার কারণে ২০২১ সাল নাগাদ ৩২ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচবে।
সংস্থাটি বলছে, এই ধরনের ক্ষতিকর পদার্থের কারণে পৃথিবীতে যত মৃত্যু হয় তার দুই তৃতীয়াংশ ওই ১৫টি দেশে। এর মধ্যে কানাডা, লাটভিয়া, স্লোভেনিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও’র পরামর্শ মেনে ২০১৭ সালে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করে।
কিন্তু বাংলাদেশের পাশাপাশি আজারবাইজান, ভুটান, ইকুয়েডর, মিশর, ভারত, ইরান, মেক্সিকো, নেপাল, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ কোরিয়া এ বিষয়ে কোনো আইন করেনি।
‘কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে গোটা পৃথিবী যখন লড়াই করছে, তখন আমাদের অবশ্যই মানুষকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নিতে হবে,’ মন্তব্য করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস বুধবার বলেন, ‘এই সময়ে অসংক্রামক রোগ থেকে অকাল মৃত্যু প্রতিরোধে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিতে হবে। এই রোগগুলো করোনার থেকেও বেশি মানুষের প্রাণ নিতে পারে। ২০২৩ সালের ভেতর ট্রান্স ফ্যাট দূর করতে আমাদের যে টার্গেট তাতে কোনোভাবেই ঢিল দেয়া যাবে না।’
গত বছর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনের সভাকক্ষে ‘ট্রান্স ফ্যাট ও হৃদরোগ ঝুঁকি এবং গণমাধ্যমের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বলা হয়, ঢাকার স্থানীয় বাজার থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে সংগ্রহ করা ১২ ধরনের বেকারি বিস্কুট নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় নমুনা বিস্কুটগুলোতে ৫ শতাংশ থেকে ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে! এই পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে (মোট ফ্যাটের ২% এর কম) অনেক বেশি।
উল্লেখ্য, ট্রান্স ফ্যাট এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি, যা ডালডা কিংবা বনস্পতি ঘি নামে আমাদের দেশে পরিচিত। এতে ২৫-৪৫ শতাংশ পর্যন্ত ট্রান্স ফ্যাট থাকে।