ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন । আর সুন্দরবনে পর্যটন মৌসুম শুারু হয় সাধারণত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে। কিন্তু করোনার প্রভাবের কারণে গত মার্চ থেকে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। বন বিভাগের নিষেধাজ্ঞা এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি। সংগত কারণে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন কেন্দ্রীক ট্যুর অপারেটরগুলো।
সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেছে ট্যুর অপারেটররা। বেলা ১১টার দিকে খুলনা নগরের বয়রায় অবস্থিত বন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন ওই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার। এ সময় ওই সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। প্রায় পাঁচ মাস ধরে সুন্দরবনের ভেতর পর্যটক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, তেমনি চরম আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন লঞ্চ, ট্রলার মালিক, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটন– সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়াও এসকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষিত বেকার কর্মহীন অবস্থায় রয়েছে ।
বক্তারা বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। এ বন দেখার আগ্রহের শেষ নেই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। প্রতিবছর কয়েক লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক ভিড় করেন সুন্দরবনের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। করোনার কারণে প্রায় পাঁচ মাস ধরে সুন্দরবনের ভেতর পর্যটক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় এখনো পর্যটকশূন্য সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলো।
ফলে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি চরম আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন লঞ্চ, ট্রলার মালিক, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটন –সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ভ্রমণ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ওই খাত–সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে ট্যুর অপারেটরগুলো চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। নেতৃবৃন্দরা দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।
ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানের মানব বন্ধন বিষয়ে খুলনা বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ মঈনুদ্দিন খান বলেন, গত ২৬ জুলাই ঢাকায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে জানানো হয়, করোনাকালে পর্যটন বন্ধ থাকায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীন পর্যটন স্থাপনাগুলোতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যে প্রাণ ফিরে এসেছে। এ কারণে আগামী অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ট্যুর অপারেটররা আবেদন করলে খুলনা বন বিভাগের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।