শনিবার , জানুয়ারি ১৮ ২০২৫

চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার আঁখি পেলেন জাতিসংঘের ‘রিয়েল লাইফ হিরো’পুরস্কার

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): খুলনার রূপসা উপজেলার বাগমারার রূপসা চরের জাতিসংঘের ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ খুলনার চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় নিয়োজিত আঁখি পেলেন গার্মেন্টস মেশিনারিজ। এসব সামগ্রী তাকে দিয়েছেন সালাম মুর্শেদী এমপি। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় রূপসা উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে ‘সালাম মুর্শেদী সেবা সংঘ’-এর মাধ্যমে আঁখিকে ফ্যাটলক, ওভার লক, প্লেন, স্টিচ ও কাটিং মেশিনসহ ১৫টি মেশিন প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সালাম মুর্শেদী সেবা সংঘের চেয়ারম্যান মিসেস সারমিন সালাম। অনুষ্ঠানে রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, ৩ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, আঁখির পরিবারের সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘের রিয়েল লাইফ হিরো আঁখির ইচ্ছাপূরণে তাকে ইলেকট্রনিক সেলাই মেশিনসহ আনুষাঙ্গিক মেশিন উপহার দিলেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি। খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আঁখি এখন শুধুমাত্র রূপসা নয় বাংলাদেশের হিরো। করোনার সময় কিছু কিছু মানুষ না এগিয়ে আসলেও এই মেয়েটি এগিয়ে এসেছে। তার মনের ইচ্ছা শিল্প উদ্যোক্তা হওয়া, তাই তার দায়িত্ব নিয়ে সেভাবেই গড়ে তোলার চেষ্টা করবো ।

জানা গেছে, কিশোরী আঁখির (১৭) লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় দারিদ্র্যের কষাঘাতে। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে তার পরিবার। সেই মেয়েটি করোনা মোকাবিলায় মাস্ক তৈরি ও দরিদ্রদের কাছে কম দামে সেটি বিক্রি করার জন্য পেয়েছে জাতিসংঘের ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ স্বীকৃতি। গত ১৯ আগস্ট বিশ্ব মানবিক দিবস উপলক্ষে চার বাংলাদেশিকে ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। অন্য তিনজন হলেন ব্র্যাকের স্থপতি রিজভী হাসান, অনুবাদক সিফাত নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান সৈকত।

জাতিসংঘের রিয়েল লাইফ হিরো পুরস্কার পাওয়া আঁখির হাতে সেলাই মেশিনসহ বিভিন্ন সামগ্রী তুলে দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করার সময় আঁখির বাবা দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন। মা চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করেন। কিন্তু তার একার রোজগারে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। বড় বোনের সঙ্গে আঁখি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণের একটি কারখানায় যোগ দেয়। এ কারণে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

দুই বছর আগে ওয়ার্ল্ড ভিশন পরিচালিত ‘জীবনের জন্য’ প্রকল্পের কর্মী আবেদা সুলতানা চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করতে দেখেন আঁখিকে। তখন আগ্রহ দেখে মেয়েটিকে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে আঁখি ওই প্রকল্প থেকে একটি সেলাই মেশিন ও কিছু থান কাপড় পায়। এরপর শুরু হয় তার পোশাক তৈরির গল্প।

This post has already been read 4148 times!

Check Also

দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মজুদ নিশ্চিত করতে হবে

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা:  চলতি আমন সংগ্রহ ২০২৪-২৫ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় খাদ্য উপদেষ্টা আলী …