নিজস্ব প্রতিবেদক: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধ কিংবা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কোনো পরিকল্পনা শিল্প মন্ত্রণালয়ের নেই। বরং চিনি কলগুলোর আধুনিকায়ন ও বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করে এগুলোকে লাভজনক করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। চিনিকলগুলো লাভজনক করতে ইক্ষু গবেষণা জোরদারের মাধ্যমে উন্নত জাতের আখ উৎপাদনের পাশাপাশি চিনিকলে পণ্য বৈচিত্রকরণের উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।
শিল্পমন্ত্রী আজ রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। শিল্প সচিব কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও কর্পোরেশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকরা ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এটি বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই কাজ করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের কর্মহারা করার প্রশ্নই ওঠে না। এসব কারখানায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মান্ধাতার আমলের মেশিনারি পরিবর্তন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন এবং প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির উদ্যোগ জোরদার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চিনিকলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত কর্পোরেশনগুলোকে লাভজনক করার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, করোনাকালীন দুরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রকল্প বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাভূক্ত দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ফলে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে গতিশীলতা এসেছে। তিনি এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রকল্প পরিচালকদের নিজ কর্ম এলাকায় অবস্থান এবং সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেন।
সভায় জানানো হয়, পঞ্চগড় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বাফার গোডাউনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ায় ১ অক্টোবর পঞ্চগড়ের বাফার গোডাউন উদ্বোধন করা হবে। ইতিমধ্যে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাফার গোডাউন নির্মাণ করা হয়। অবশিষ্ট ১১টি বাফার গোডাউনের নির্মাণকাজ জুন ২০২১ সালে সমাপ্ত হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় চামড়া শিল্প নগরী, ঢাকা ও বিসিক শিল্প নগরী, ভৈরব প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিদর্শন রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপি’র ক্রোম সেপারেশন, ক্রোম রিকভারি, অটোমেশন ও অনলাইন মনিটরিং স্থাপনে অবশিষ্ট কার্যক্রমসমূহ দ্রুত সমাপ্ত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়া সিটিপি পরিচালনার দক্ষতা ও সক্ষমতা অর্জনের জন্য চামড়া শিল্প নগরী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়া চামড়া শিল্প নগরীসমূহের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ ও ট্যানারিসমূহে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার প্রতিরোধে মিটারিং ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করতে বিসিককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্প সচিব কে এম আলী আজম বলেন, স্থানীয় চাহিদা ও প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে শিল্পনগরী স্থাপন করতে হবে এবং সেখানে শিল্প কারখানা পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ও পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে হবে। শিল্পসচিব সততা, নিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়নতার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান