ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : অবিলম্বে বন্ধ সকল রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো চালু এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা এককালীন পরিশোধের দাবীতে শুক্রবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে রাত অবধি চলে খালিশপুর বিআইডিসির সড়কের ক্রিসেন্ট মিল গেট চত্বরে এ বিশাল শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সমন্বয়ক শ্রমিকনেতা রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রণ্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক প্রবীণ রাজনীতিবিদ টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান, শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা অপু দাশগুপ্ত, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের যশোর অঞ্চলের নেতা জাহাঙ্গীর ফিরোজ, আমিন জুট মিল চট্টগ্রামের শ্রমিকনেতা কামাল উদ্দিন, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আতিফ অনীক, হোটেল-বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা জসিম সরদার, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতা নজরুল ইসলাম, নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা বাহারুল ইসলাম, কার্পেটিং জুট মিল শ্রমিক নেতা কামরুল ইসলাম, জেজেআই শ্রমিক নেতা আবুল হালিম মিঠু, খালিশপুর জুট মিল শ্রমিক নেতা মনির হোসেন, আলমগীর হোসেন, রিকসা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা শাহ আলম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নেতা সুজয় বিশ্বাস শুভ, ষ্টার জুট মিল শ্রমিক নেতা বাচ্চু বেপারী, ক্রিসেন্ট জুট মিল শ্রমিকনেতা মোশাররফ হোসেন, রিয়াজুল ডিয়ার, প্লাটিনাম জুট মিল শ্রমিকনেতা আল আমিন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একটি বিনা ভোটের ফ্যাসিবাদী সরকার। করোনাকালীন মহাদুর্যোগে সরকার ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিকের পেটে লাথি মেরে ও পাটচাষীসহ পাটশিল্পের সাথে জড়িত ৩ কোটি মানুষকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। সরকার ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে পাটের বাজার ও জুট মিলের স্বার্থে এবং বিশ্বব্যাংক আইএমএফ-এর পরামর্শে এক নোটিশে দেশের রাষ্টীয় খাতের ২৫টি জুট মিলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমান সরকার বিনা ভোটে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে দেশে এক অগণতান্ত্রিক রাজত্ব কায়েম করেছে। সরকার মনে করছে তারা দেশের মালিক কৃষক-শ্রমিকরা মানুষ না। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন কালাকানুন দিয়ে শ্রমিকশ্রেণির প্রতিবাদকে বন্ধ করতে চায়।
সারা দেশে চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দুর্বিসহ অবস্থায় আছে। ৭০ হাজার প্রবাসী শ্রমিক ছাঁটাই হয়ে দেশে ফিরে আসছে। সরকার গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা করে দেশে এক ভয়ের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিযেছে। নারী-শিশু ধর্ষণে সরকারের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের জড়িত থাকায় দেশে নারী-শিশুদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। পিপিপি নামক প্রহসনের ফর্মুলা ঝুলিয়ে পাটকলগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি কিছু লুটেরা ব্যবসায়ীদের হাতে দিতে চায়। রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো জনগণের সম্পত্তি।
শ্রমিকরা জীবন থাকতে রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো ধ্বংস হতে দেবে না। সরকার যদি অতিদ্রুত পাটকলগুলো খুলে না দেয় এবং বকেয়া পাওনা এককালীন পরিশোধ না করে তাহলে আগামীতে দেশের জনগণকে নিয়ে কঠিন এবং রাজপথের কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করা হবে পাটকল শ্রমিকদের দাবী মেনে নিতে।