শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪

লতাজাতীয় বিভিন্ন ফসলের ফলন বৃদ্ধির আধুনিক কৌশল

মো. রিয়াজুল ইসলাম ইশমাম : 2G, 3G, 4G কাটিং এর মাধ্যমে লাউ ,মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, শসা, জিঙ্গা, করল্লা সহ ইত্যাদি লতানো গাছের ফলন কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। তার আগে আসুন জেনে নিই 2G,3G,4G কাটিং বলতে কি বুঝায়?

সাধারণত 2G, 3G,4G দিয়ে বুঝায় মূলত সেকেন্ড জেনারেশন, থার্ড জেনারেশন, ফোর্থ জেনারেশন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে গাছের জেনারেশন কি? এর উত্তর হবে-

১) বীজ থেকে যে কাণ্ড বের হয় তার নাম 1G

২) 1Gকাটার পর যেই শাখা বের হবে তার নাম 2G

৩) 2Gকাটার পর যেই শাখা বের হবে তার নাম 3G

একটি লাউ গাছের প্রধান কাণ্ড বা স্টেম হলো ফার্স্ট জেনারেশন। প্রধান কাণ্ড থেকে বের হওয়া শাখা কাণ্ড হলো সেকেন্ড জেনারেশন। আর সেকেন্ড জেনারেশন কাণ্ড থেকে বের হওয়া প্রশাখা হলো থার্ড জেনারেশন। একেই ভাবে 3G থেকে বের হয় 4G .

পদ্ধতিটি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়ার জন্য ছবিটি খেয়াল করুন।

লাউ, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি লতানো গাছের অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য হলো  এর প্রধান কাণ্ডে কখনো স্ত্রী ফুল হয় না, সবসময় পুরুষ ফুল হয়। তাই দেখা যায় যে, গাছে শুধু প্রধান কাণ্ড থাকলে সেই গাছে ফল হয় না।

এক্ষেত্রে যখন গাছে প্রধান কাণ্ডে ১২টি পাতা হয়ে যাবে তখন গাছের মাথা কেটে দিন। এতে গাছ আর লম্বা না হয়ে শাখা প্রশাখা বের করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়বে। তখন দেখা যাবে যে 2G শাখার বৃদ্ধি হতে থাকবে এবং পুরুষ ফুল এর পাশাপাশি স্ত্রী ফুল থাকবে। আবার যখন 2G শাখা ১২ টি পাতা হয়ে যাবে তখন সেই 2G শাখার মাথা কেটে দিলে সেই 2G শাখা থেকে 3G শাখা বের হবে। তখন স্ত্রী ফুলের ফলন বাড়বে। তবে 2G কাটিং থেকে 3G কাটিং দেওয়ার সময় কিছু 2G রেখে দেবেন কারণ 2G যে পুরুষ ফুলগুলো থাকবে তা দিয়ে 3G এর স্ত্রী ফুলকে পরাগায়নে সহায়তা করবে। যখন মন মতো স্ত্রী ফুল পেয়ে যাবেন তখন প্রধান কাণ্ডে থাকা পুরুষ ফুল এর সাথে হাত পরাগায়ন  করে দিবেন। আর যদি 3G কাটিং এ মন মতো স্ত্রী ফুল না পান তাহলে 4G কাটিং করে দিবেন একেই পদ্ধতি অবলম্বন করে।

এভাবে 2G, 3G,4G কাটিং এর মাধ্যমে ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব যার মাধ্যমে আমাদের কৃষক ভাই বোনেরা সফলতা অর্জন করছে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা, জিঙ্গা , করল্লা সহ ইত্যাদি লতানো গাছে।

সতর্কতা: কাটিং এর সময় অবশ্যই জীবাণুমুক্ত ব্লেড অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে যাতে ছত্রাক আক্রমণ না ঘটে।

লেখক: শিক্ষার্থী, বিএসসি ইন এগ্রিকালচার, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

This post has already been read 5597 times!

Check Also

জলঢাকায় সোনালী ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

বিধান চন্দ্র রায় (নীলফামারী) : নীলফামারীর জলঢাকায় মাঠের যে দিকে চোখ যায়, সেদিকেই সবুজের সমারোহ। …