পিরোজপুর : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ও সবজির ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। শেখ হাসিনা সরকার বিশুদ্ধ ও পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি জনগণের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। তবে রাষ্ট্র একা সবকিছু করতে পারেনা। এজন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় সকলে মিলে কাজ করতে হবে।”
সোমবার (১৯ অক্টোবর) পিরোজপুরের গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, “ভোক্তা অধিকার আইনের আওতায় সরকার সর্বত্র মনিটর করছে, মোবাইল কোর্ট করা হচ্ছে, মামলা করা হচ্ছে। যাতে মানুষের নিরাপদ খাদ্যের অধিকার যেনো-তেনো উপায়ে কেউ বিনষ্ট করতে না পারে। খাদ্যে ভেজাল মেশালে অতীতে ছিলো সীমিত শাস্তি। কিন্তু খাদ্যে ভেজাল থাকলে জীবন বিপন্ন হতে পারে। সেজন্য বিশুদ্ধ খাদ্য আইনকে সংশোধন করে সাজার পরিমান বাড়ানো হযেছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে বঙ্গবন্ধু খাদ্যকে মৌলিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সে সময়ও খাদ্য যে মৌলিক অধিকার সেটাকে দেশের সর্বোচ্চ আইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।”
শ ম রেজাউল করিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেরা কূটনীতিতে বাংলাদেশের সমপরিমাণ সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমুদ্রে প্রায় তিনশ রকম প্রাণিজ খাবার আমরা আবিষ্কার করেছি। দেশে প্রায় ১২৩ প্রজাতির দেশীয় মাছ বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিলো। পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটানোর জন্য শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গবেষণার মাধ্যমে দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় সকল প্রজাতির মাছকে আমরা ফিরিয়ে আনছি। দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য ময়মনসিংহের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে জীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের মাধ্যমে আমরা ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কাজ করছি। পাহাড়ী এলাকায় মাছ চাষের উদ্যোগ নিয়েছি। স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বিশ্বে আমরা দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছি। চাষের মাছ উৎপাদনে আমরা চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের পরেই রয়েছি। এটা দূরদর্শী রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার কারনে সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, “করোনায় কৃষিখাত তথা মৎস্য, পোল্ট্রি ও লাইভস্টকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ করা হয়েছে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড। পোল্ট্রি, লাইভস্টক বা মাছের খামার করলে নগদ সহায়তা এবং সহজশর্তে ও স্বল্পসূদে ঋণ দেয়ার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি।”
পরে পিরোজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, পিরোজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ও পূজা উদযাপন পরিষদ, পিরোজপুর জেলা শাখার সহযোগিতায় আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শারদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মন্ত্রী।