রংপুর: কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেছেন ‘কৃষক পর্যায়ে ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ব্যয় আরো কমাতে হবে। উৎপাদন ব্যয় ও ফলন পার্থক্য হ্রাস করা গেলে সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনে বিশাল পরিবর্তন আসবে। কৃষক আরো বেশি লাভবান হবে। ধানের ফলন ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে নতুন জাত ও প্রযুক্তি দ্রুত সম্প্রসারণের পাশাপাশি কৃষকদের কে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। সার ও কীটনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষিত করার মাধ্যমে অপচয় রোধ করা যাবে।
আজ (শুক্রবার, ৬ নভেম্বর) রংপুরে ব্র্যাক লানিং সেন্টার মিলনায়তনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর আঞ্চলিক অফিসের সহযোগিতায় আয়োজিত “রংপুর অঞ্চলে বোরো ধানের ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষি সচিব বলেন, দানাদার শস্যের ক্ষেত্রে আমরা স্বংয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, এটি ধরে রাখতে হবে পাশাপাশি অন্যান্য ফসলের উৎপাদনশীলতা আরো বাড়াতে হবে। নতুন ধানের জাত কৃষক সহজে গ্রহণ করবে এমন নয়, প্রয়োজনে নতুন ধানের বীজ বিনামুল্যে বিতরণ করতে হবে। এ বছর বোরো বীজে সরকার কেজি প্রতি ১০ টাকা হারে ভর্তুকি দিচ্ছে। এসব বীজ সুষ্ঠভাবে বিপণন ও বিতরণ করতে হবে। তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর নেটওয়ার্ক আরো শক্তিশালী করার আহবান জানান যাতে নতুন জাত ও প্রযুক্তি দ্রুত কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা যায়। করোনাকালে কৃষি কর্মকর্তাদের তৎপরতার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁর মতে করোনা মহামারী সত্ত্বেও কৃষির সাফল্য আমাদের বড় সাপোর্ট দিয়েছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রি রংপুর আ লিক কার্যালয়ের প্রধান মো. রাকিবুল হাসান। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ, ব্রির পরিচালক প্রশাসন ড. কৃষ্ণ পদ হালদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কৃষিবিদ মাহফুজ হোসেন মিরদাহ।
কর্মশালায় ব্রির পক্ষ থেকে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- ড. খন্দকার মো. ইফতেখারুদৌলা, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান, উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর পক্ষ থেকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষিবিদ মো. মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রংপুর অ ল।
সভপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ব্রি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরম্পর সহযোগী। ব্রি জাত-প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সেগুলো মাঠে নিয়ে যায়। অতএব আমরা একে অন্যের পরিপূরক। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। তিনি নতুন জাতের বীজের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের সরাসরি ব্রির সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অ লের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা
ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা), মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বারটান, পানি উন্নয়ন বোর্ডএর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।