মো. দেলোয়ার হোসেন (টি,পি) : দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। দেশের এই খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মিটাতে বোরো ধান, গম, ভুট্টা, ডাল, তেল ও মসলা জাতীয় ফসলের আবাদ বাড়িয়ে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে।
বন্যার পরে স্বল্প মেয়াদী ফসল হিসেবে ভুট্টা, ডাল, তেল ও মসলা ফসল দ্রুত চাষ করা সম্ভব। তাই বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার এই পুর্ণবাসন কর্মসুচীর আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে সহায়তা হিসেবে গম, সরিষা, টমেটো, মসুর, খেসারী, চিনাবাদাম, মরিচসহ তেল উৎপাদনের সুর্যমুখীর বীজ ও রাসায়নিক সারের মধ্যে ডিএপি ও এমওপি সার বিতরণ করে চলেছেন। এই পুণর্বাসন ও প্রনোদণা সহায়তা কাজে লাগিয়ে ফসলের আবাদ বাড়াতে হবে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে গত বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রবি/২০২০-২১ মৌসুমে প্রণোদনা ও পুণর্বাসনসহায়তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বদলগাছী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শামসুল আলম খান এসব কথা বলেন। তিনি কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে রবি ফসল উৎপাদন ও কৃষির উন্নয়নে এগিয়ে আসার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে পরিশেষে আহবান জানান।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: হাসান আলীর সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মো: ইমামুল আল হাসান তিতু ও খালেদা আক্তার এবং বদলগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুস সালাম।
স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি বলেন, বদলগাছী উপজেলায় ধান চাষের পাশাপাশি ফল বাগান স্থাপনের মাধ্যমে ব্যাপক ফল চাষ হয় এবং পাশাপাশি সবজি ও তেল ফসলের আবাদ হচ্ছে। তাই প্রণোদনা ও পুর্ণবাসন সহায়তা পেলে রবি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, কৃষি পূর্নবাসন ও প্রণোদনা কর্মসুচীর আওতায় চলতি বছরের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে রবি মৌসুমে বোরো, গম, সরিষা, ভুট্টা, টমেটো, পিয়াজ, মরিচ, মসুর, খেসারী, চিনাবাদম, মুগ ও সুর্যমুখীর ফসলের আবাদ বৃদ্ধি কল্পে ১ বিঘা জমিতে আবাদের জন্য বীজ ও রাসায়নিক সার হিসেবে ডিএপি ও এমওপি সার প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারী প্রনোদণার সহায়তা কাজে লাগিয়ে ডাল, তেল, বাদাম ও পিয়াজ ফসল বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসার জন্য উপস্থিত কৃষকদের অনুরোধ জানান তিনি।
বদলগাছী কৃষক প্রশিক্ষণ হলরুমে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনীতে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, পুর্ণবাসন ও প্রনোদণা সহায়তা গ্রহনকারী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকসহ প্রায় ৯০০ জন উপস্থিত ছিলেন। সমুগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মো. জহির রায়হান।
উল্লেখ্য, প্রণোদনার আওতায় বদলগাছী উপজেলায় বোরো আবাদের জন্য ৩৩০ জন, গমের জন্য ৩০০ জন, সরিষার জন্য ৮৪০ জন, ভুট্টায় ১০০ জন, টমেটোর জন্য ২০০ জন, মরিচের জন্য ৩০০ জন, পিয়াজের জন্য ৭০ জন, মসুর আবাদে ৪০০ জন, খেসারী আবাদে ৩০০ জন, মুগ আবাদে ১৬০ জন, চীনাবাদামে ১০০ জন এবং সুর্যমুখী আবাদের জন্য ১০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে প্রণোদনা সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৮৪০ জন কৃষককে সরিষা আবাদের জন্য ১ কেজি বীজ, ডিএপি সার ১০ কেজি এবং এমওপি সার ১০ কেজি হারে প্রদান করা হয়।