শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে – শ ম রেজাউল করিম

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা ) : “দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। করোনাকালে কয়েক লাখ মানুষ বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছে, যারা এখন বেকার। দেশের ভেতরে অনেকে বেকার হয়ে গেছে। এ সময় গার্মেন্টস খাত ও প্রবাসীআয় বাধাগ্রস্ত হয়েছে। করোনার কারণে আমাদের কাঁধে এখন লাখ লাখ বেকার। এ জন্য আমরা প্রত্যেক বেকারকে স্বাবলম্বী করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তাদেরকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদন কাজে সহায়তা করা হবে। সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হবে। প্রান্তিক মানুষদের সরাসরি নগদ প্রণোদনা দেয়া হবে, যাতে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। যাকে সহায়তা দেয়া হবে তিনি আর বেকার থাকবেন না। তিনি গর্ব করে বলবেন আমি উদ্যোক্তা, আমি স্বাবলম্বী। এভাবে গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল করতে পারলে, বেকারত্ব দূর করতে পারলে, দারিদ্র্য দূর করে অর্থনীতিকে সচল করতে পারলে কোভিড-১৯ আমাদের বিপর্যয়ে ফেলতে পারবে না।”

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) খুলনার বয়রায় বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর, খুলনা’র নবনির্মিত সম্মলন কক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়  বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর, খুলনা’র নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন খাদ্য বলতে শুধু ধান, চাল, ভুট্টা,গমকেই বোঝায় না, খাদ্যের একটি বড় অংশ হচ্ছে মাছ, মাংস, শাকসবজি। তিনি আরো বলেছিলেন ভিক্ষুকের জাতির কোন মর্যাদা থাকে না। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য নিয়ে শেখ হাসিনা গোটা জাতিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।”

শেখ হাসিনা বিশ্বের সেরা ক্রাইসিস ম্যানেজার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “করোনা সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ভ্রাম্যমান বিক্রয় কেন্দ্র চালু করেছি। প্রায় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার মৎস ও প্রাণিজাত পণ্য ভ্রম্যমান কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়েছে। উদ্যোক্তা, খামারি ও উপকারভোগীদের জন্য কন্ট্রোলরুম করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।”

প্রধান অতিথি আরো বলেন, “ভারত পাকিস্তান ও নেপালের চেয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বের কারণে। তিনি উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যার কাছে জাতি নিরাপদ, যার কাছে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা নিরাপদ, যিনি সততার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, যিনি অনিয়মকে গ্রহণ করেন না, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না আসুন আমরা সবাই মিলে তার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শামিল হই।”

মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এমপি আরো বলেন, “বিএনপি দেশকে দরিদ্র করতে চেয়েছে আর শেখ হাসিনা দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার চেয়েছিল দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার দরকার নেই। তা না হলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে না। আমরা দরিদ্র থাকবো, ভিক্ষুক থাকবো। অথচ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলে মানুষের মর্যাদা থাকে না। এ জন্য তার জাদুকরী নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। আমরা আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ খাদ্য রপ্তানি করে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।”

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আবদুল জব্বার শিকদার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম শাকিলুজ্জামান ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, খুলনা বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও প্রাণিসম্পদ খাতে সম্পৃক্ত উদ্যোক্তা ও খামারীগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং ফলক উন্মোচন করে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর, খুলনা’র ৬ তলাবিশিষ্ট নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

This post has already been read 4122 times!

Check Also

মহিষের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

সাভার সংবাদদাতা: মহিষের উৎপাদন বাড়ানো আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, একসময় …