নওগাঁ সংবাদদাতা: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বিজ্ঞান বর্তমান বিশ্বকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। বিজ্ঞান একটি সমাজ, দেশ তথা বিশ্বের জন্য আশীর্বাদ। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চার কোন বিকল্প নেই। আজ সকাল ১০টায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ‘৪২তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ’ উপলক্ষে আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় ঢাকা থেকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এই পথে নতুন প্রজন্মকে শরিক হতে হবে। সে লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষায় নিজেকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। একটা সময় ছিল পরীক্ষার ফল বের হবার পর একজন পরীক্ষার্থীকে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হতো ফলাফল জানার জন্য। এখন বিজ্ঞানের কল্যাণে ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যেই একজন পরীক্ষার্থী তার ফলাফল জেনে যাচ্ছে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের কল্যাণে। তারাই প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটা সেক্টরই আজ ডিজিটালাইজড হয়েছে। দেশ ডিজিটালাইজড হয়েছিল বলেই করোনা মহামারীকে মোকাবেলা করা অনেক সহজ হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণ ঘরে বসেই প্রতিটা সেক্টর থেকে সেবা গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা এখন প্রায় সকল কাজই ডিজিটাল পদ্ধতিতে করছি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন খাদ্য অধিদপ্তরেও প্রায় সকল কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বিজ্ঞানের অপব্যবহার করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক ভালো সংবাদ যেমন প্রচার করা হয়ে থাকে তেমনি কিছু কিছু অসাধু, দুষ্টু লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে বিভিন্ন নেতিবাচক অপপ্রচার চালিয়ে থাকে। এটা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়, এটা চরম অপরাধ। তিনি বিজ্ঞানকে মানুষের কল্যাণকর কাজে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে চিন্তাধারা তার সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে একাত্মতা প্রকাশ করতে হবে, তাহলেই একাত্তরের মহান স্বাধীনতার উদ্দেশ্য সফল হবে। নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মেধাবী প্রজন্ম না থাকলে কোন দেশ উন্নতি করতে পারে না। তাই মন দিয়ে পড়ালেখা করতে হবে, বিশেষ করে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চার কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সার্বিকভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা হচ্ছেন মানুষ তৈরীর কারিগর। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মেধাবী করে গড়ে তোলেন। নতুন প্রজন্ম মেধাশূণ্য হলে দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে বিজ্ঞানভিত্তিক মেধাবী প্রজন্ম প্রয়োজন, বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে নতুন প্রজন্মকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
মহামারী করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ‘৭১ সালে যেমন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছি, তেমনি সবাইকে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই মহামারী করোনা মোকাবেলা করে জয়ী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে মাস্ক পড়ে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাইরে চলাচল করার আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী।
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়া মারিয়া পেরেরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব ফরিদ আহমেদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাদিরা বেগম, নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় জনগণ।