নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশেই প্রাণিসম্পদ খাতের ভ্যাকসিন তৈরির তাগিদ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি। সোমবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সম্মেলন কক্ষে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সায়েন্টিফিক কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ তাগিদ দেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, “প্রাণিসম্পদ খাতে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশ থেকে আমদানি কমাতে হবে। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন আনলে অনেক অর্থ ব্যয় হয়। এটি দেশে তৈরি করলে এ ব্যয় এক-তৃতীয়াংশ হবে। এতে আমাদের অর্থ সাশ্রয় হবে। করোনাকাল যত বেশি অর্থ সাশ্রয় হবে, সে অর্থ দিয়ে আমরা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবো।”
দেশের প্রতিভাবান বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারলে সেটা কেন আমরা বিদেশ থেকে আনবো-এ প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী এ বিষয়ে আরো বলেন, “গবেষণালব্ধ সম্পদ সরবরাহ করতে না পারলে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। সেজন্য এ খাতের বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান দিয়ে প্রাণিসম্পদ খাতকে বিকশিত করতে হবে, সমৃদ্ধ করতে হবে। বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার মত অবস্থা সৃষ্টি করতে হবে।”
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদারের সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকারসহ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গবেষক এবং বিজ্ঞানীগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন
গবেষক ও বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন,”দেশের সীমিত সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার করতে হবে। মেধার বিকাশ যে যতটা ঘটাবেন তিনি তত বেশি সৃষ্টি করতে পারবেন। সকলকে আরো বেশি তৎপর হতে হবে। নিজ যোগ্যতার প্রকাশ ও বিকাশ করাটাই আপনাদের দায়িত্বের পরিধি। একজন বিজ্ঞানী বা একজন ভালো লেখাপড়া করা ব্যক্তির প্রতিভার বিকাশ সম্পূর্ণ আলাদা দেখতে চাই। দেশের বাইরে আমাদের বিজ্ঞানীরা প্রতিভার বিকাশ ঘটাচ্ছে। দেশের বাইরে পারলে এখানে কেন নয়? দেশে প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে এগুতে পারলেই সার্থকতা আসবে। প্রতিবছর রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতির সাথে ভ্যাকসিন আপডেট করাই আপনাদের কৃতিত্ব। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের অপেক্ষায় না থেকে আপনাদেরকেই হতে হবে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। আপনাদেরই হতে হবে দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, হতে হবে সমস্যা সমাধানকারী।”
প্রধান অতিথি আরো বলেন, “আমাদের সুন্দর বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমাদের দায়িত্ব এই দেশের জন্য কিছু করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাওয়া-ঘুম হারাম করে এদেশের জন্য অকল্পনীয় পরিশ্রম করছেন। তিনি জেগে থাকেন বিধায় বাঙালি জাতি নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারে। কারণ গোটা জাতির বোঝা তিনি কাঁধে নিয়ে চলেন। তিনি চান দেশের লাইভস্টক সেক্টর, মৎস্য সেক্টর বিকশিত হোক।”
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো আয়োজিত দিনব্যাপী এ কনফেরেন্সে ২১টি গবেষণা পেপার উপস্থাপন করা হয়।