নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিএলআরআই) এর বিদায়ী মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার বিদায়ী সংবর্ধনা ও নব-নিযুক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল জলিল-এর বরন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিকেলে বিএলআরআই সম্মেলন কক্ষে উক্ত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বিএলআরআই এর নব-নিযুক্ত মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল জলিল সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রাণিসম্পদ-২) শাহ্ মো. ইমদাদুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রাণিসম্পদ-২) ড. অমিতাভ চক্রবর্ত্তী। সঞ্চালনা করেন বিএলআরআই এর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আজহারুল আমিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, প্রকল্প পরিচালকগণসহ সকল স্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
বিদায়ী মহাপরিচালক এর উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করেন পোল্ট্রি উৎপাদন গবেষণা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শাকিলা ফারুক। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিদায়ী মহাপরিচালকের উদ্দেশ্যে স্মৃতিচারণ করেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারী ও কর্মকর্তাবৃন্দ। এসময় বক্তারা তাঁর উদ্ভাবনী কৃতিত্ব, কর্মকুশলতা, ক্ষমাশীলতা, ভদ্রতা, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁর সুনাম, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি শাহ্ মো. ইমদাদুল হক মহোদয় তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ড. নাথু রাম সরকার ছিলেন একজন নিরেট ভদ্রলোক। কাজের মাধ্যমে তিনি দেশে-বিদেশে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। আপনারা তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে গবেষণার কাজে আত্মনিয়োগের মাধ্যমে মেধা ও মননের প্রয়োগ ঘটিয়ে স্বীয় দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে একেক জন নাথু রাম সরকার হয়ে উঠবেন, দেশ ও জাতির জন্য সুফল বয়ে আনবেন বলে প্রত্যাশা করছি।” একই সাথে তিনি বিদায়ী মহাপরিচালক যেন ভবিষ্যতেও প্রতিষ্ঠানের সাথে তাঁর সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখেন সেই আহ্বান জানিয়ে ও বিদায়ী মহাপরিচালকের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
বিশেষ অতিথি ড. অমিতাভ চক্রবর্ত্তী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বিদায় অনুষ্ঠান কষ্ট দেয়, যখন বিদায়ী অতিথি হন প্রিয় ব্যক্তি। ড. নাথু রাম সরকার তাঁর কর্মদক্ষতা, প্রজ্ঞা, সদ্বিচ্ছা ও ঐকান্তিকতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।” একই সাথে বিদায়ী মহাপরিচালকের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যেন কাজে লাগানো হয় সেই আহ্বান জানান।
নব-নিযুক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল জলিল তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের এই আয়োজন বিদায় অনুষ্ঠান নয়, আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। ড. নাথু রাম সরকার অত্যন্ত সফলতার সাথে তাঁর দীর্ঘ ত্রিশ বছরের কর্মজীবন অতিবাহিত করেছেন। বিদায় বেলাতেও তিনি ৪১ জন কর্মকর্তার পদোন্নতির ব্যবস্থা করে গেছেন, যা ইতোপূর্বে আর কেউ দিতে পারেননি। তিনি একজন ভদ্র, উদার ও বড় মন-মানসিকতার মানুষ। মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিই প্রমাণ করে জাতীয় ক্ষেত্রে তাঁর অবদান কতটুকু।” একই সাথে তিনি কৃষিবিদদের অবদানের যথার্থ স্বীকৃতি প্রদান করায় বর্তমান সরকার এবং প্রবিধান-পদোন্নতি বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য মন্ত্রণালয়কে ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে বিএলআরআই এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পেনশন চালু করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
বিদায়ী মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার তাঁর বিদায়ী বক্তব্যে বলেন, “আমি গর্বিত ও সম্মানিত অনুভব করছি। বিএলআরআইকে আমি চিরদিন মনে রাখবো। চেষ্টা করেছি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার, যখন যে দায়িত্ব পেয়েছি তা যতটা সম্ভব পালন করার চেষ্টা করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে সব সময় সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়েছি। মন্ত্রণালয়ের এই পরিবেশ, এই সহযোগিতা পূর্ণ মনোভাব বজায় থাকলে আমার বিজ্ঞানীরা যেকোন চ্যালেঞ্জ নিতে সদা প্রস্তুত। আমার দ্বার বিএলআরআই এর জন্য সর্বদা উন্মুক্ত।” প্রতিষ্ঠানের জনবল বৃদ্ধিতে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করে এবং উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।